বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥ হতদরিদ্র সোবাহান ও নাজমা দম্পতির জীবন-জীবিকার পথটুকুও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। নিজের জমির পাশের কার্লভার্টের মুখে একটি জাল পেতে স্বামী-স্ত্রী রাতভর নির্ঘুম অপেক্ষার পরে যা মাছ পায় তা বিক্রি করে দুই সন্তানসহ চারজনের সংসারের চাকা ঠেলতেন। কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া দুই সন্তানের লেখাপড়ার যোগান দেন। তাও বন্ধের শঙ্কায়।
সোমবার রাতে যুবলীগের ক্যাডার পরিচয়ে একই এলাকার বদিউল, নাদিম, দুলালের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একদল হোন্ডাবাহিনী সন্ত্রাসী হামলে পড়ে। প্রথমে সোবাহনকে চলা (লাকড়ি) দিয়ে পেটায়। স্ত্রী নাজমা স্বামীকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে তার ওপর হামলে পড়ে। বাবা-মাকে রক্ষায় এগিয়ে আসে বড় ছেলে এইএসসি পরীক্ষা দেয়া রুমান। তাকে মারধর করা হয়।
জালটি ছিড়ে ফেলা হয়। গ্রামের লোকজন জড়ো হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়না। ক্যাডাররা ওই স্পটে জাল পাতার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তারা নিজেরাই জাল পাতবে। উপায়ন্তর না পেয়ে সোবাহান ৯৯৯ তে ফোন করেন। তাৎক্ষণিক কলাপাড়া থানার এসআই বিপ্লব মিস্ত্রি ঘটনাস্থলে পৌছেন। সোবাহানকে আশ^স্ত করেন। বিষয়টি স্থানীয় এমপি অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমানকে অবগত করানো হয়।
তিনি সোবাহান দম্পতির ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। বর্তমানে এ পরিবারটি আছেন চরম নিরাপত্তাহীন। তারা পরিবার এবং পেটের জন্য নিজের জমির ওপরে রাস্তার কালভার্টে জাল পেতে জীবীকার নিশ্চয়তার জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামে অন্যের বাড়িতে আশ্রীত এ পরিবারটি। মধুখালী থেকে তেগাছিয়া যাওয়ার সড়কের পাশেই অবস্থান।
একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান জানান, দরিদ্র সোবাহানের পরিবারকে যারা হয়রাণি কিংবা উপার্জনে বাধা হয়ে দেখা দিবে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সোবাহান জানান, তার ওপর ফের হামলার শঙ্কা করছেন। জালটি ছিড়ে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়া রুমানের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে ও নবম শ্রেণির খোকনের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
ছোট ছেলেকে ফের মারধরের ভয়ে স্কুলে পাঠানো বন্ধ রয়েছে। কারন হামলাকারীরা সবাই স্কুলে যাওয়ার পথের আশপাশে আড্ডা দেয়। করে বখাটেপনা। কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সোবাহানের ওপর কোন ধরনের হামলা তো দুরের কথা কেউ সমস্যা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply