শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে অন্তত: ১৩টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে প্রতিদিন দু’দফা জোয়ারের পানিতে বন্ধ হয়ে গেছে কৃষকদের চাষাবাদ।
ভেসে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ। রান্নার চুলা পর্যন্ত জ্বলছেনা অগনিত পরিবারের। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে এলাকার মানুষ। অপরদিকে মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর পয়েন্টের বাঁধটি এখন ঝূঁকির মধ্যে রয়েছে। জোয়ারের পানির চাপে যে কোন সময় বাঁধটি ভেঙ্গে অন্তত: পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হতে পারে এমন আশংকার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, অমাবস্যার প্রভাবে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের অরক্ষিত বেড়িবাধ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে চারিপাড়া, পশরবুনিয়া, ধঞ্জুপাড়া ও নয়াপাড়াসহ ১২/১৩ টি গ্রাম প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে ওইসব গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ঘর-বাড়ীতে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই অপেক্ষাকৃত উচুঁস্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। এছাড়া এক গ্রাম থেকে অপর গ্রামের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। এরপরও পাউবো কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
এদিকে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর বাঁধটিও ঝুঁকিপূর্ন থাকায় জোয়ারের পানির চাপে যে কোন সময় বাঁধটি ভেঙ্গে কমরপুর, সুধিরপার, পুরান মহিপুর, ইউসুবপুর ও নিজামপুর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া চম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুর বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে কয়েকটি গ্রাম।
মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের মো. নুরজামান হাওলাদার বলেন, ২০০৭ সালে ঘূর্নিঝড় সিডরের আঘাতে ভেঙ্গে যায় নিজামপুর ও সুধিরপুরের বেড়িবাঁধ। এরপর কয়েক দফা পনি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিত ভাবে বর্ষা মৌসুমে নির্মান কাজ করলেও তা টেকসই না হওয়ায় এ বাঁধটিতে ফের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
লালুয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামের কৃষক ইসহাক হাওলাদার বলেন, লবন পানিতে ক্ষেত খামার তলিয়ে রয়েছে। চাষাবাদও বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে ঘরের ভিতর ঢুকে পড়ে। বিশেষ করে অমাবস্যা কিংবা পূর্নিমার জোয়ারের সময়ই এসমস্যা প্রকট আকার ধারন করে।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, এ বাঁধের বিষয় নিয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং অমাবস্যা কিংবা পূর্নিমার জো’তে ইউনিয়নের ১২/১৩ টি গ্রামের মানুষ সবচেয়ে দূর্ভোগে থাকে। এসব মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে স্থায়ী টেকসই বাঁেধর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন বলেন, নির্মান কাজ শেষ হওয়ার এক বছর না যেতেই নিজামপুর বাঁধের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আমি দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধটি পুন:নির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করতে করতে আমার মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। কিন্তু প্রতিকার মেলেনি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (কলাপাড়া সার্কেল) খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান বলেন, লালুয়া ও মহিপুরের নিজামপুর বেড়িবাঁধের প্রকল্প মন্ত্রনালয় পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply