শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ১১:১৩ অপরাহ্ন
এম.কে. রানা : ঈদ মানেই আনন্দ, মিলন আর উৎসব। কিন্তু এই উৎসবের দিনে কিছু মানুষ সবসময় ছুটির তালিকার বাইরে থাকেন—তারা হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মী, পুলিশ সদস্য, চিকিৎসক, ফায়ার সার্ভিসকর্মী এবং পরিবহন খাতের চালক ও সহকারীরা। এদের কেউ ঈদের দিন পরিবারের সঙ্গে বসে পোলাও-মাংস খান না, কেউ শিশুর মুখে ঈদের নতুন জামার আনন্দ দেখেন না, বরং তারা রাস্তার পাশে ডিউটি পোস্টে, হাসপাতালের ওয়ার্ডে, বা আগুন নেভাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
একজন চিকিৎসক যখন অপারেশন টেবিলে রোগীর প্রাণ রক্ষা করছেন, একজন পুলিশ সদস্য যখন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ঈদের জ্যামে ঘেমে যাচ্ছেন, কিংবা একজন সাংবাদিক যখন লাইভে কোনো গুরুত্বপূর্ণ খবর দিচ্ছেন, তখন তারা দেশের জন্য, জনগণের জন্য দায়িত্ব পালন করছেন। অনেকেই বলেন, তারা তো বেতন নেন, কাজ করতেই হবে। কিন্তু দায়িত্ব আর মানবিকতা এক জিনিস নয়। পরিবারের আহ্লাদ, সন্তানের মুখ, কিংবা মায়ের হাতে তৈরি সেমাইয়ের স্বাদ—সব কিছুই তারা বিসর্জন দেন।
তাদের এই ত্যাগ নিঃশব্দ, নিরব। তারা নিজ দায়িত্বের মাঝেই খুঁজে নেন ঈদের আনন্দ। কোনো পুলিশ সদস্য হয়তো হাতে ডিউটি থাকা সত্ত্বেও বৃদ্ধকে রাস্তা পার করিয়ে দেন, কোনো সাংবাদিক হয়তো পথশিশুর মুখে ঈদের গল্প তুলে ধরেন। এটাই তো প্রকৃত ঈদের মর্ম।
আমরা যারা ঘরে বসে ঈদের আনন্দ নিই, আমাদের উচিত তাদের কথা স্মরণ করা। ঈদে একটি ধন্যবাদ, একটি আন্তরিক শুভেচ্ছাও তাদের জন্য অনেক কিছু। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই শ্রেণির মানুষদের জন্য কোনো ‘ঈদ সম্মাননা’ বা ‘বিশেষ ছুটি’র ব্যবস্থাও চিন্তা করা উচিত। একইসাথে, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জন্য পরিবারসহ ঈদের পর আনন্দ আয়োজন করতে পারে, যাতে তারা আনন্দ থেকে একেবারে বঞ্চিত না হন।
ঈদের চেয়ে বড় উৎসব হয়তো নেই, কিন্তু কারও ত্যাগে সে উৎসব আরও পবিত্র হয়। তাই যারা উৎসব ছেড়ে দায়িত্বে থাকেন, তারাই ঈদের আসল নায়ক।
Leave a Reply