শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইতালির মোনফ্যালকনে শহরের মেয়র অ্যানা মারিয়া সিসিন্ত বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। শহরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জনগণ বিদেশি, যাদের মধ্যে প্রধানত বাংলাদেশি মুসলিমরা। নব্বইয়ের দশকে প্রমোদতরী নির্মাণের জন্য বাংলাদেশিরা মোনফ্যালকনে আসেন। কিন্তু এখন শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের হুমকি হিসেবে তাদের দেখছেন মেয়র অ্যানা মারিয়া সিসিন্ত।
মেয়র অ্যানা মারিয়া সিসিন্ত চরম ডানপন্থি লিগ পার্টির নেত্রী হিসেবে অভিবাসনবিরোধী অবস্থান নিয়ে নির্বাচিত হন। শহরের ‘সুরক্ষা’ নামের নতুন প্রকল্পের আওতায় তিনি শহরের খ্রিস্টান মূল্যবোধ রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বাংলাদেশি মুসলিমদের সাংস্কৃতিক উপস্থিতি সীমিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
শহরের মুসলিম নারীরা সেলোয়ার-কামিজ ও হিজাব পরিধান করে থাকেন যা মেয়রের কাছে দৃষ্টিকটু বলে মনে হচ্ছে। মেয়রের প্রশাসন বেঞ্চগুলো সরিয়ে দিয়েছে এবং শহরের দুটি ইসলামিক সেন্টারে জামাতে নামাজ পড়ার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে শহরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
অ্যানা মারিয়া সিসিন্ত ইতালির আইনের সুযোগ নিয়ে ইসলামিক ধর্মের উল্লেখ না থাকার ভিত্তিতে এই পদক্ষেপগুলো নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার জন্য এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, মোনফ্যালকনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা মেয়রের এই সিদ্ধান্তকে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে দাবি করছেন।
ইতালি, ইউরোপের কম জন্মহারযুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখানে গত বছর মাত্র ৩ লাখ ৭৯ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। দেশটির শ্রমিক সংখ্যা কমে আসছে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বছরে ২ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিকের প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবুও, প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির অভিবাসনবিরোধী অবস্থান অব্যাহত রয়েছে।
যদিও ইতালিতে অ-ইউরোপীয় কর্মীদের পারমিট বাড়ানো হয়েছে, তবুও মোনফ্যালকনে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব দৃশ্যমান। এটি দেশটির শ্রমিকদের চাহিদা এবং অভিবাসন নীতির মাঝে এক বৈপরীত্য সৃষ্টি করছে।
Leave a Reply