শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালে পুলিশের পিকাপ ভ্যান ও পুলিশবক্সে হামলা ভাঙচুর চালিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর চৌমাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয় পুলিশ। এদিকে দেশে চলমান শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও হয়রানির প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ জন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন।
নগরীর চৌমাথা এলাকায় শনিবার (৩ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের একটি ভ্যান উল্টে ফেলে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একইসময় সেখানে অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মৃধা পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলায় দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ এবং নয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মসজিদ গেটে জড়ো হতে থাকে। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় এসে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুইপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। অবরোধ চলাকালীন এক ছাত্রলীগ কর্মীকে শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করে মারধর করেন। বৃষ্টির মধ্যে সড়কে বসে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সিএন্ডবি সড়কের দিকে চলে যায়।
এদিকে শত শত আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও তাদের সাথে থাকা বেশ কিছু অভিভাবকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে নগরীর চৌমাথা এলাকার সড়ক অবরোধ করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা চৌমাথা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুলতান মৃধা পুলিশ বক্সে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। একইসময় পুলিশের একটি পিকাপ ভ্যান ভাঙচুর করা হয়। হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে দেশে চলমান শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও হয়রানির প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়েছেন ৩৫ জন শিক্ষক। শুক্রবার রাতে দেওয়া ওই বিবৃতিতে প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন তারা।
বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, গত ১৫ জুলাই থেকে দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং পরে দেশের সর্বত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ওপর হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের নজিরবিহীন ঘটনা ঘটছে। এযাবৎ অন্তত দুইশতাধিক মৃত্যুর খবর দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। গুলিতে ও আঘাতে অনেকে ইতোমধ্যে চোখ হারিয়েছেন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। দেশের ইতিহাসে এমন ছাত্রহত্যা ও ছাত্রনিপীড়নের ঘটনা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্যতীত কোনো সময়ে এমনকি কোনো সামরিক সরকারের সময়েও ঘটার নজির নেই।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা একইরূপ হামলার শিকার হয়েছে। এমন নিপীড়নের ব্যাপকতায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ দিশেহারা। তাই অবিলম্বে এই সকল নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। একইসাথে শিক্ষার্থী হয়রানি ও শিক্ষার্থী নিপীড়ন বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ খুলে দিয়ে অতিসত্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের দাবির সাথে তারা একাত্মতা প্রকাশ করেন।
Leave a Reply