শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১২ পূর্বাহ্ন
বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি॥ তরুণীকে সাপে দংশন করেছে এমন সন্দেহে তাকে চিকিৎসা দিতে মাদারীপুরের কালকিনি থেকে বরিশালে আসেন কবিরাজ আলী আকবর হোসেন ও তার দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলেই সবকিছু ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায় কবিরাজের দল।
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউপির আগরপুর গ্রামে বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, চিকিৎসা করাতে বাড়ির উঠানে টানানো হয় সামিয়ানা। তার নিচে কলাগাছ পুঁতে জ্বালানো হয়েছে মোমবাতি, আগরবাতি ও ধূপ। একই সঙ্গে বাজানো হচ্ছে ঢাকঢোল আর বাদ্যযন্ত্র। পড়া হচ্ছে মন্ত্র। আর মাঝখানে বসানো হয়েছে এক তরুণীকে। চলছে কবিরাজি চিকিৎসা।
তরুণীর স্বজনরা জানান, রোববার রাতে তরুণীকে সাপ বা বিষাক্ত কোনো পোকা কামড় দেয়। এতে তরুণী আতঙ্কিত হলে ওই রাতেই তাকে পাশ্ববর্তী কালিকীনী উপজেলায় কবিরাজ মো. আলী আকবর হোসেনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝাড়ফুঁক শেষে আবার বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয় তরুণীকে। ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার তরুণীর স্বজনরা কবিরাজ মো. আলী আকবর হোসেনকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তিনি ওইদিন বেলা ১১টা থেকে তার উদ্ভট চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন।
তরুণীর বাবা বলেন, এই কবিরাজ এমন অনেক রোগী এর আগেও ভালো করেছেন বলে তিনি শুনেছিলেন। তার গ্রামের দুজন ও পাশের গ্রামের একজনকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন এই কবিরাজ। গ্রামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে তিনি যোগাযোগ করে ৩৭ হাজার টাকার চুক্তিতে কবিরাজকে মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব দেন। তাদের বাড়িতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থার করতে হয়েছে তাকে।
তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত কবিরাজের চিকিৎসায় তার মেয়ের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেনি। কবিরাজ পালিয়ে গেলে বুধবার রাতে মেয়েকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর সুস্থ হলে বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম তারেক বলেন, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার নামে ভন্ডামি চলছিল। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে যান। পুলিশ দেখে ভিড়ের মধ্যে কবিরাজ তার দল নিয়ে পালিয়ে গেছে।
আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিদুল আলম বলেন, কবিরাজ ওই এলাকায় ঢোকামাত্র তাকে আটক করা হবে।
Leave a Reply