রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ৩ বছর ধরে এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সহকারী শিক্ষক আবু সাইদ মো. ফরিদ দায়িত্ব পালন করেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে হোসনেয়ারা আরজুকে নামে এক শিক্ষিকাকে ২৯ মার্চ এ বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। ১২ এপ্রিল বিকেলে তড়িঘরি করে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর করে যোগদান করে দায়িত্বগ্রহণ না করেই তিনি ছুটির আবেদন রেখে চলে যান।
যদিও বিধি অনুযায়ী তিনি যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই সয়ংক্রিয়ভাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু তিনি স্কুলের আয়-ব্যায় হিসাব রক্ষার জন্য চিঠি প্রেরণ, আয়-ব্যয় কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ, অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ছাড় না করাসহ যোগদানের পরবর্তী কোন কার্যক্রম সম্পন্ন না করেই বরিশালের বাসায় চলে যান। ছুটির এক সপ্তাহর পর আরো তিনদিন চলে গেলেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি। এমনকি বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের কোন ডকুমেন্টও তিনি রেখে যাননি অফিসে।
এদিকে রমজানে শিক্ষক-কর্মচারীরা এপ্রিল মাসের বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন বিদ্যালয়ের ৩৭ জন শিক্ষক ও ১০ জন কর্মচারী। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা আরজু আগের কর্মস্থল ঝালকাঠি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আড়াই বছর ঠিকমতো ক্লাসে যাননি।
জানা যায়, ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ সাহা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় শূন্য রয়ে যায় পদটি। আগে থেকেই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের দুইটি পদও শূন্য ছিল। ওই বছরের ১৬ এপ্রিল শর্তসাপেক্ষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষক আবু সাঈদ মো. ফরিদকে। ২০১৯ সালের ১৩ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহপিরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে চারটি শর্ত দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম শর্ত হচ্ছে শূন্যপদে প্রধান শিক্ষক অথবা জ্যেষ্ঠতম সহকারী প্রধান শিক্ষক যোগদান করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি এ আদেশের প্রদত্ত ক্ষমতা বিলুপ্ত হবে। অর্থাৎ নতুন যিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করবেন তিনিই দায়িত্ব পেয়ে যাবেন।
হোসনে আরা আরজু দায়িত্ব পাওয়ার পরে নিয়মানুযায়ী তিনি বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব এবং ডিজি’র কাছে চিঠি পাঠাবেন। কিন্তু তিনি এসব কিছু না করেই সাতদিনে ছুটির আবেদন করেন অবৈধ প্রক্রিয়ায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, আবু সাঈদ মো. ফরিদ হোসেনকে অবৈধভাবে দায়িত্ব দেওয়ার জন্যই হোসনে আরা আরজু তড়িঘড়ি করে যোগদান করেন, আবার দ্রুত বরিশাল চলে যান। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। শিক্ষকরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের মাঝেও পড়বে বলে মনে করেন অনেক শিক্ষক।
এ ব্যাপারে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংকটের কথা মোবাইলে শুনে বলেন, বিদ্যালয়ের এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলবো। আমি অন্যকাজে ব্যস্ত আছি।
Leave a Reply