শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫২ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক।। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন গৃহবধূ। সেই মামলা তুলে নিতে নিজের স্বজনেরাই তাকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তিনি মামলা তোলেননি। এ কারণে প্রকাশ্যে পেটানো হয় ওই নারীকে। ওই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
নির্যাতিতার স্বজনদের বরাতে পুলিশ জানায়, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার উপজেলার বালিহাটা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শহীদুল ইসলামের মেয়ে। তিনি গৌরীপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছেন। ২০১৮ সালে ফুফাতো ভাই পাভেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পাভেলের বাড়ি উপজেলার নওপাড়া গ্রামে। পেশায় মাছ ব্যবসায়ী তিনি। বিয়ের পর ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন স্বামী। ইয়াসমিনের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। জোরপুর্বক দু’বার তার গর্ভপাতও ঘটানো হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে গত বছরের ২৬ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১ মার্চ পাভেলকে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন ইয়াসমিনের চাচা আনোয়ার ইসলাম। তিনি মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। পরে এ ঘটনায় আরেকটি মামলা করেন ইয়াসমিন। চাচার বিরুদ্ধে মামলা করায় গত ১০ মার্চ ইয়াসমিনকে তার চাচা, চাচি ও চাচাতো বোন মিলে পেটান। এক যুবক ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
ইয়াসমিনকে মারধরের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার তার ভাই মাহবুব আলম বাদী হয়ে আদালতে ফের একটি মামলা করেছেন। বোনের ওপর অত্যাচারের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ইয়াসমিনের ভাই মাহবুব আলম। আদালত ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) ওই মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইয়াসমিন আক্তার বলেন, যৌতুক চেয়ে মারধর করা হতো। পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার পর আরও পাঁচ লাখ টাকার জন্য চাপ দেয়। সংসারে টিকতে না পেরে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। মামলা তুলে নিতে চাচা ও অন্য স্বজনরা চাপ শুরু করেন। পরে তিনি আরেকটি মামলা করেন। সে কারণে তাকে প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার চান।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে বিষয়টি পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনা বলে জানা গেছে। তবে মারধরের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply