মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন
দশমিনা প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর দশমিনায় মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরমকাল আসার সাথে সাথে ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে মশার বিস্তার। দিনরাত সব সময়ই মশার কামড়ে অতিষ্ঠ উপজেলাবাসী। দিনেও অফিস কিংবা বাসাবাড়িতে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। বেলা ডুবলেই মশার উৎপাত আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের এইচ এম ফোরকানসহ একাধিক বাসিন্দারা জানান, ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথেই মশার উৎপাত ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। কয়েল ও মশারি মশারি টাঙ্গিয়েও মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলার হাট বাজারের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা নোংরা পানি, অধিকাংশ জলাশয়ে কচুরিপানা, ড্রেনের কাজ অর্ধেক করে ফেলে রাখায়, এবং যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলায় মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দেখে মনে হবে এ যেন মশার খামার। মশার উৎপাতে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার চরম ব্যাঘাত ঘটছে।
নাজমুল হক টিটু বলেন, আমার মেয়ে গছানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে আর ছেলে গছানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। সারাদিন মশার উৎপাত থাকলেও সন্ধ্যার পর পরেই এর উৎপাত আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। ফলে সন্ধ্যায় মশার কয়েল জালিয়ে বা স্প্রে করে বাচ্চাকে পড়াতে বসাতে হচ্ছে। কয়েল জালালে বাচ্ছা হাছি দেয় বলে আব্বু আমার শ্বাস করতে কষ্ট হয়।
দক্ষিন দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সামছুল হক বলেন, মশা নির্ধনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। আর আমরা মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। এখন আমার বাসায় মশারি টাঙ্গিয়ে ছেলে-মেয়েকে লেখা-পড়া করাতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে আমার ভাইয়ের ছেলে অসুস্থ হয়ে পরলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই ডাক্তার বলে মশার কামড়ে এমন হয়েছে। এখন একটু সুস্থ হলেও হাতে পায়ে কালো কালো দাগ পরে গেছে।
দশমিনা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি ফয়েজ আহম্মেদ ও সাধারন সম্পাদক এসকে ব্যানার্জী বলেন, প্রতিনিয়ত মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধূর্ত মশা নিধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া খুব জরুরী। আর যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলায় মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মশার বংশ বিস্তার ঘটাতে আদ্রতা, উষ্ণতা ও পনির প্রয়োজন হয়। এখন আবহাওয়া উষ্ণ এতে জমে থাকা পানি বা বৃষ্টির পানিতে মশার বংশ বিস্তার সহজেই ঘটে। এসময় মশার কামড়জনিত রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। মশার কামড়ে মানুষ চিকনগুনিয়া, ম্যালিরিয়া ও ডেঙ্গেু রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু মেলিরিয়া রোগ বাংলাদেশ খুব কম। এজন্য সকলের সচেতন থাকা প্রয়োজন।
দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সদর বাজার বনিক সমিতির সভাপতি এ্যাড. ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, ড্রেনে ময়লা আবর্জনাসহ যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলায় মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আর মশা নিধনের ঔষধ ব্যবহার করা হবে খুব তারাতারি।
Leave a Reply