খবরের খোঁজে ছোটার ইতি টানলেন মিজান Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০২ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




খবরের খোঁজে ছোটার ইতি টানলেন মিজান

খবরের খোঁজে ছোটার ইতি টানলেন মিজান

খবরের খোঁজে ছোটার ইতি টানলেন মিজান




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক।। সম্পাদকের ভাষায় ‘আউলা-ঝাউলা, কিন্তু জাত সাংবাদিক’ মিজানকে করোনা কেড়ে নিয়েছে। অনেকগুলো রাতের কথা মনে করতে পারি, যখন হঠাৎ করেই মিজানের একটি প্রতিবেদন শেষ মুহূর্তে সম্পাদকের টেবিল থেকে এসেছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ খবর, কিন্তু যথাযথ সম্পাদনার জন্য তখন সময়ও নেই। সম্পাদক মতি ভাই তখন বলেন, ‘ও তো এভাবেই কাজ করে—আউলা-ঝাউলা, কিন্তু খবরটা জরুরি।’ কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই মিজানের বহু প্রতিবেদন এভাবেই ছাপা হয়েছে। ‘আউলা-ঝাউলা’ মিজান বিদায় নিলেন পরিবার এবং প্রথম আলোর সবাইকে অপ্রস্তুত রেখেই। অপ্রস্তুত বলছি এ কারণে যে তাঁর বয়স তো হয়েছিল মাত্র ৫৩।

 

 

করোনাকালেও তাঁর সঙ্গে নানা সময়ে টেলিফোনে কথা হয়েছে। প্রতিবারই তাঁকে মনে করিয়ে দিয়েছি, করোনার সংক্রমণ থেকে সাবধান থাকুন। কিন্তু সাংবাদিকতার নেশা তাঁকে সংক্রমণ থেকে রেহাই দেয়নি। চিকিৎসাধীন করোনায় আক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নিতে তিনি নিজেই হাসপাতালে চলে গেছেন। প্রথম প্রথম কিছুদিন জনসমাগম এড়ানোর চেষ্টা করলেও পরে জনাকীর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও গেছেন খবরের খোঁজে। সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেন বলে শুধু সম্পাদকীয় আর উপসম্পাদকীয় লেখায় তিনি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি।

 

 

মিজানের সাংবাদিকতার নেশাটি হলো রিপোর্টারের মতো, খবরের সন্ধান করে বেড়ানো। সংবাদপত্রজগতে যে রূপান্তর ঘটছে, তিনি তাতে এগিয়ে থাকার চেষ্টায় সাংবাদিকতায় হাতিয়ার হিসেবে কলমের জায়গায় মোবাইল ফোনের ব্যবহারও রপ্ত করে নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি চমৎকার ভিডিও প্রতিবেদন করেছেন। মোবাইল সাংবাদিকতাতেও তিনি মজে যেতে চেয়েছিলেন। মিজান, তা তো আর হলো না!

 

প্রথম আলোতে যোগ দেওয়ার আগে মিজানের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। তবে তাঁর লেখা এবং টিভির পর্দায় হাজিরাসূত্রে তাঁকে চিনতাম। আইনের খুঁটিনাটি নিয়ে তিনি প্রচুর লিখেছেন এবং কথা বলেছেন। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে আন্তরিকভাবে বলেছেন।

 

 

তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও আইন পড়িয়েছেন। কিন্তু যখন জেনেছি যে আইন বিষয়ে তিনি স্বশিক্ষিত, প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেননি, তখন বিস্মিত হয়েছি।

 

মিজানের সঙ্গে আইন নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক শুধু পত্রিকায় অফিসেই হয়েছে, তা নয়।

 

 

আমাদের অভিন্ন বন্ধুদের বাসায় এবং ক্লাবেও হয়েছে। বিচারপতি, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আমলাদের নিয়ে অনেক আসরে এসব বিতর্কে রাত গভীর হয়েছে, কিন্তু মিজান উৎসাহ হারাননি। বাহাত্তরের সংবিধানে তাঁর অগাধ বিশ্বাস। কিন্তু দুর্বলতার দিকগুলো তুলে ধরলে তা মেনে নিয়েছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রশ্নে সব সময় কলম সচল রেখেছেন। তাঁর যে কোনো রাজনৈতিক বিশ্বাস বা আদর্শের প্রতি পক্ষপাত ছিল না, তা নয়। কিন্তু পেশার কাজে তিনি তার প্রতিফলন ঘটতে দেননি। তাঁর সঙ্গে মতের মিল হওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

 

 

যাঁরা তাঁকে শুধু আইনের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে জানেন, তাঁরা অনেকেই হয়তো খেয়াল করেননি, তিনি অর্থনীতি কিংবা বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোতেও খবরের পেছনে ছুটেছেন। নতুন নতুন বিষয়ে কাজ করার আগে যাঁরা সেই বিষয়ে ভালো জানেন, তাঁদের কাছে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে থেকে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে নিয়েছেন। একই প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার আগপর্যন্ত যতবার সম্ভব ততবার তিনি তাতে তথ্য সংযোজন করেছেন। এই হাল না ছাড়া মনোভাব তাঁর একটি বিরল গুণ। সততা ও পেশার দায়িত্ববোধ থেকে কোনো কিছু্ই তাঁকে বিচ্যুত করতে পারেনি।

 

কামাল আহমেদ, সাংবাদিক

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD