সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির মৃত্যুদণ্ডের পর প্রকাশিত হতে থাকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য। এরমধ্যে বেশির ভাগ তথ্যই মিন্নি, রিফাত ও নয়ন বন্ডের ফোন কল থেকে পাওয়া গেছে।
নয়ন বন্ডের দেয়া একটি সিম ব্যবহার করতেন মিন্নি। যা রেজিস্ট্রেশন করা ছিল নয়নের মায়ের নামে। পুলিশের অনুসন্ধানে সেসব কথোপকথন বেরিয়ে এসেছে।
পুলিশের দাবি, রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে মিন্নি ওই সিমটি ব্যবহার করতেন। হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল ৯টা ৮ মিনিটে ওই নম্বর দিয়েই নয়ন বন্ডকে কল করে মিন্নি ৪০ সেকেন্ড কথা বলেন।
হামলার পর বেলা ১১টা ৩১ মিনিটে নয়ন বন্ড মিন্নিকে একটি এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। পরে রিফাত শরীফ মারা যাওয়ার পর বিকেল ৪টার কিছু সময় আগে নয়ন বন্ড মিন্নির কাছে আরেকটি এসএমএস পাঠান। ওই এসএমএসটিতে লেখা ছিল, ‘আমারে আমার বাপেই জন্ম দেছে।’ রিফাত শরীফকে মারার পরিকল্পনার সময় মিন্নি নয়ন বন্ডকে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি রিফাত শরীফকে মারতে পার, তাহলে বুঝব তোমারে তোমার বাপেই জন্ম দিছে।’
আলোচিত এ মামলায় মিন্নি ছাড়াও রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় ও মো. হাসানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলায় খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর, কামরুল হাসান সায়মুন।
৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। পাশাপাশি তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। বাকি চারজনকে খালাস দেয়া হয়। এ রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ছাড়েন তারা। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিনই মারা যান।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। একইসঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৮ জানুয়ারি একই মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার শিশু আদালত। এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply