শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক//
নোংরা পরিবেশে চিনির সিরা ও নামমাত্র দুধ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি ও রসমালাই। অন্যদিকে এখনও বন্ধ হয়নি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই ও নিম্নমানের চিপস উৎপাদন। এসব খাবারে যেমন পুষ্টির অভাব রয়েছে তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও এই খাবার ভয়াবহ ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর মিরপুরে মিষ্টি ও রসমলাই তৈরির একটি কারখানায় চিনির সিরাতে ভাসছে তেলাপোকা। যা দেখলে যে কারও ভ্রু কুঁচকে উঠতে পারে। একই জায়গায় রান্নাঘর, গোসলখানা।
চুলায় ছানা তৈরির দুধে পানি, তাতে আবার ময়দা মেশানো। পাশে রাখা চিনির সিরায় ভাসছে পোকা-মাকড়। দেখলে অরুচি হতে বাধ্য।
কাপড়ের রং দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সেমাই
মিষ্টি কারখানার কর্মচারি জামাল হোসেন বলেন, রাতের বেলা চার কেজি সন্দেশের সাথে এক কেজি ময়দা মেশানো হয়। আর দিনের বেলা স্পেশাল সন্দেশ শুধু ছানা দিয়ে তৈরি করা হয়।
অপরদিকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বেশ কয়েকটি সেমাই কারখানা থাকলেও বাইরে থেকে তালা ঝুলানো থাকে। যেন কোনও ভ্রাম্যমাণ আদালত বা আইনি জটিলতায় না পড়তে হয়। নিজেদের ব্যবহারের জন্য তারা অন্য দরজা ব্যবহার করে। হঠাৎ বাইরের কেউ এলে আগেভাগে সতর্ক হওয়ার জন্য বাইরে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। দরজা খুলতেই দেখা গেলো কারখানা পরিষ্কারের দৃশ্য।
অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে কেবল সেমাই নয়, তৈরি হয় নানা রং মিশিয়ে বাচ্চাদের চিপস। যারা নেই কোনও মানদণ্ড, নেই অনুমোদনও।
ফ্যাক্টরিতে কর্মরত জব্বার হোসেন বলেন, আমরা এই ফ্যাক্টরি ছেড়ে দেব। তাই এই অবস্থা। নইলে আমাদের সব সময় সব কিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে।
এমন অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. নাজমুল হক ভূইয়া বলেন, আমরা প্রত্যক্ষভাবে বিষ না খেলেও পরোক্ষভাবে বিষ খাচ্ছি। বেকারির অনেক খাবারে অনেক সময় কাপড়ের রং ব্যবহার করা হয়। এই রংযুক্ত খাবারগুলো সরাসরি আমাদের পাকস্থলিতে ক্ষতি করে।
মিষ্টির সিরার মধ্যে এভাবেই ভাসছে তেলাপোকা
দীর্ঘদিন ধরে এসব খাবার খাওয়ায়, পেটের পীড়াসহ জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. প্রণব চৌধুরী বলেন, এইসব খাবার খেলে দুই ধরনের সমস্যা হতে পারে। এক হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা আবার তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যা। তাৎক্ষণিক সমস্যার মধ্যে শরীরে এলার্জি হতে পারে। আর দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার মধ্যে ডায়রিয়া ও ক্যানসাসের মতো বড় ধরনের রোগও হতে পারে। তাই আগামী প্রজন্মকে রক্ষায় ভেজাল খাবার বন্ধে, সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে।
Leave a Reply