শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ অপরাহ্ন
শাকিব বিপ্লব॥এইচ এম হেলাল:
প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটি মত আছে, আছে সত্বা। তদ্রুপ আমার ভাবনার সাথে অপরাপরদের চিন্তা চেতনা যে অভিন্ন হবে তা ভাবাটা নিরেট বোকামি। কিন্তু আমার মত প্রকাশ’র স্বধীনতার আলোকে যা বলতে চাই তা অনেকের গাত্রদাহ হতে পারে। এর কারন এখন তৈল মর্দনের যুগ। স্বর্থ ভোগের লালসায় একটি মহলের নেতার প্রতি ভালবাসা উতলে পরছে যে ভুল শুধরে দেয়ার বদলে উল্ট আরো এগিয়ে দিতে বড়ই বেসামাল দেখা যায়। নচেৎ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ৫০ বছর জন্ম জয়ন্তি অনুষ্ঠানের অতিথির আমন্ত্রন নিয়ে ঘোর বিতর্কের মাঝে কিভাবে নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সেখানে অংশ নিলেন। যদ্দুর জানাগেছে এ অঞ্চলের স্বাস্থ্য খাতের অহংকারের প্রতীক শেবাচিম হাসপাতালের এযাবৎ কালের বৃহৎ গত সোমবারের এই অনুষ্ঠানের অতিথির তালিকা প্রনয়নে আ’লীগ ঘরোনার জনৈক এক চিকিৎসকের ভূমিকা রয়েছে।
তিনিই নাকি অতিথি হিসেবে কে কে থাকবেন তার একটি খসরা তৈরী করেছিলেন। প্রথমত সেই তালিকাও আ’লীগের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের পছন্দ সই হয়নি। পরবর্তিতে শীর্ষ এক আ’লীগ নেতার ইচ্ছা অনুযায়ী আমন্ত্রিতদের তালিকা সাজানো হয়। বিস্ময়কর বিষয় জেলার সরকার প্রশাসনের শীর্ষ পদস্থ কর্মকর্তাদের আমন্ত্রন জানানো হয়নি। আরো অবাক করা কন্ড আমন্ত্রনের ক্ষেত্রে বরিশাল মিডিয়াকেও বিভাজন করা হয়েছে। সাংবাদিকদের বৃহৎ একটি অংশকে বাদ রেখে ডাকা হয়েছে নাম ডাক ওয়ালা পত্র পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া কর্মীদের। আমন্ত্রন নিয়ে এই বির্তকের মাঝে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ অংশ নিয়ে নিজেও ঝড়ালেন আলোচনা সমালোচনায়। আমার জানা মতে তরুন এই নেতা কম বিচক্ষন নয়। তিনি কি এই বির্তক সম্পর্কে মোটেই অবগত নন (?) অবশ্যই তার কান পর্যন্ত কিছু কথা গড়িয়েছে। তবুও অনুষ্ঠানে যেতে উদ্যোগী হলেন কোন স্বার্থে (?) তার উত্তরে যা পাওয়া গেল তার সারকথা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী টেলিকনফান্সে’র মাধ্যমে শেবাচিমের এই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন বিধায় অতিথিদের আসনে অন্তত স্থানীয় আ’লীগ নেতা হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকতে বাধ্য হয়েছেন। আবার কারো দাবি তিনি উৎসায়ী হয়েই এসেছেন আমন্ত্রন পেয়ে। লক্ষনিয় বিষয় ছিল গোটা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রী নাসিম অপেক্ষা সাদিকের মুল্যায়ন যে বেশিই ছিল তা কারো দৃষ্টি আড়াল করা যায়নি। কিন্তু মেয়র হিসেবে মূল্যায়ীত এই নেতা ইচ্ছা করলে অনুষ্ঠানের অতিথিদের আমন্ত্রন জটিলতার তালিকার হেরফের করার ক্ষমতাও তার ছিল। তা না করে তিনি যেভাবে অনুষ্ঠনে হাস্যজ্জল ছিলেন তাতে মনেই হয়নি এই মঞ্চ নিয়ে কতো জল ঘোলা হচ্ছে এবং হয়েছে। আমার নিজস্ব অনুমান, সম্ভাবত বির্তক এড়াতেই মন্ত্রী ও এই অঞ্চলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ অনুষ্ঠানটি এড়িয়ে গেছেন। কারো মন্তব্য পুত্র সাদিক আবদুল্লাহ থাকার কারনে তিনি আসেন নি। কারন তার উপস্থিতি ঘটলে সাদিকের উজ্জলতা কমে যেত। তাহলে মেয়র হিসেবে আগামীদিনে সাদিক আবদুল্লাহ যে অনুষ্ঠানে থাকবেন সেখানে কি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ অনুপস্থিত থাকবেন। এপ্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনেক আ’লীগ নেতা খেই হারিয়ে ফেলেন।
তাদের রাগ-ক্ষোভ থেকে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল অথাৎ এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রনে অতিথি চিহ্নিতের ক্ষেত্রে নেপথ্যে ভূমিকা ছিল কার। কথা হচ্ছে বার বার কেন নয়া মেয়র বিতর্কে জড়াচ্ছেন। ইতিপূর্বে বরিশাল বিএম স্কুল মাঠে (তাঁত বস্ত্র ও হস্ত শিল্প) মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নয়া মেয়রের উপস্থিতি নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। স্কুল মাঠে এধরনের অনুষ্ঠান পালনে আইনি বিধি নিষেধ থাকলেও তা ভঙ্গ করে শুধু মেয়র সাদিক নয় ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন শ্রীংলাকে প্রধান ও বিশেষ অতিথি করার মধ্যেও এক ধরনের রাজনীতি ছিল বলে কম বেশি আলোচনা থেকে শোনা গেছে। মেয়র নিবাচির্ত হলেও সাদিক আবদুল্লাহ এখনো আনুষ্ঠানিক দায়ীত্ব ভার নেয়নি। একজন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ হিসেবে কেন তিনি দায়ীত্ব নেয়ার আগেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন বা উৎসায়ীত হচ্ছেন তা অনেকের বোধ গম্য নয়। কেউ বলছে তরুন এই নেতা ক্ষমতার পূজারী হয়েছেন। তাই সামাল দিতে পারছেন না কোন আমন্ত্রন। নিজে একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মিডিয়ার কথা বাদ দিলাম। কিন্তু শেবাচিমের অনুষ্ঠানে বিভাগ প্রশাসনিক ও আইন শৃংখলা বাহিনীর উচ্চ পদস্থ্য কর্মকর্তাদের এবং সামাজিক ব্যত্তিত্বদের কেন অতিথির তালিকায় রাখা হল না তা বড়ই অবাক কান্ড। অনেকটা যেচে পড়ে জেলা প্রশাসক মহদয়কে অনুষ্ঠান স্থলে দেখা গেছে সম্ববত স্বাস্থ্য মন্ত্রী বরিশাল আসার কারনে। তরুন দলীয় নেতা ও মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর কাছে সেই মন্ত্রীর উপস্থিতিও অনেকটাই ম্লান মনে হয়েছে। ঢাকা থেকে সাদিক আবদুল্লাহ আসছেন এখবরে গত সোমবার বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যেভাবে আ’লীগ নেতা কর্মীরা দল বেঁধে মিছিল নিয়ে জড়ো হয়েছেন এবং অনেক র্শীর্ষ সাড়ির নেতাদের দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে তাতে মনে হয়েছে জাতীয় কোন নেতার আগমনের পূর্বপ্রস্তুতি দৃশ্যপট।
একদিকে এই দৃশ্য অন্যদিকে শেবাচিমের বির্তকিত অনুষ্ঠান’র অতিথি সাদিক আবদুল্লাহ। তরুন এই নেতা নিবাচিত হওয়ার পর শপথ নেয়ার অপেক্ষায় দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। সংগত কারনে বির্তক থেকে কথা উঠেছে যখনি অনুষ্ঠান তখনি ঢাকা থেকে সাদিক আবদুল্লাহ’র বরিশাল আগমন ঘটে। কারনও তো রয়েছে। তাঁত বস্ত্র মেলা ও শেবাচিমের জন্ম জয়ন্তি পরপর এই দুইটি অনুষ্ঠানই বির্তকের জালে জড়িয়েছে। রাজনৈতিক ও ব্যাক্তি স্বার্থ উদ্ধারে এসব অনুষ্ঠন নিয়ে এ বির্তকের পিছনে একটি মহল যে সক্রিয় তা এখন স্পস্ট। কিন্তু কেহ মুখ খুলতে সাহস নিচ্ছে না। তবে তাঁত বস্ত্র মেলা নিয়ে বির্তক বেশিদুড় না গড়ালেও শেবাচিমের জন্ম জয়ন্তি অনুষ্ঠান’র আমন্ত্রন নিয়ে বঞ্চিত অতিথিদের মধ্যে ক্ষোভের যন্ত্রনা কান পাতলেই শোনা যায়। কেউ বলে হয়রে বরিশাল, কতো খেলা দেখা যায়।
Leave a Reply