শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ কুমিল্লায় নয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন জয়কে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে জুতা পেটা করা হয়েছে। জুতা পেটার ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এই ভিডিও ব্যক্তিগত ওয়ালে আপলোড দিয়ে জেলার ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওই ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
জয় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তিনি কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। এছাড়াও জয় নিজেকে কুমিল্লার স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। সোমবার (২৪ আগস্ট) বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেঙ্গাহাটা এলাকার চৌহমুনীতে ছাত্রলীগ নেতা জয়ের ওষুধ ফার্মেসির ভিতরে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে।
সালিশি বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রতন মেম্বার জানান, চেঙ্গাহাটা চৌহমুনীতে জয়ের একটি ওষুধ ফার্মেসি রয়েছে। পাশে একটি চা দোকান আছে। দুপুরে মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় চা দোকানির নয় বছরের শিশুটি বাবার দোকানে আসলে ছাত্রলীগ নেতা জয় ওই মেয়েকে তার ফার্মেসিতে ডেকে নেয়। জয় তাকে ফার্মেসির পিছনের রুমে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটি চিৎকার করলে অন্যান্য দোকানিরা তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রকেট মজুমদারসহ বসে মিমাংসার চেষ্টা করি। বৈঠকে শিশু ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন জয়কে জুতাপেটা করা হয়। সালিশ বৈঠকের বিচার মেনে নিয়েছে শিশুর পরিবার।
এবিষয়ে লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াত উল্লাহ বলেন, জয় আমার কাছে স্বীকার করেছে। তারপর তাকে সালিশি বৈঠকে জুতাপেটা করা হয়। যাদের অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামী লীগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়, এই ধরণের নেতাদের আওয়ামী লীগের মতো সংগঠনে মানায় না। আমরা তার বহিষ্কার দাবি করছি।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন জয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটি আমার ফার্মেসিতে গিয়েছে। তবে আমি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করিনি। পরে সালিশি বৈঠকে রকেট ভাই আমাকে ডেকে নিয়ে জুতাপেটা করবেন আগে থেকে বুঝতে পারিনি।
সালিশি বৈঠকের বিচারক মাহবুবুর রহমান রকেট বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এলাকাবাসী জয়কে আটক করে মারধর করেছে। আমার গ্রামের ছেলে হওয়ায় অভিভাবক হিসেবে জুতাপেটা করে তাকে ছাড়িয়ে এনেছি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেল বলেন, অপরাধ ব্যক্তির, দলের নয়। অভিযুক্ত জয়কে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদক বরাবর আমরা আবেদন করেছি।
লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, আমি বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ছাত্রলেীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে জয়নাল আবেদিন জয়কে বহিষ্কার করা হয়।
https://web.facebook.com/amitbhuiyan17/videos/1250950071920924/
Leave a Reply