বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ নওগাঁর বদলগাছীতে একটি ভাড়াবাসা থেকে প্রায় এক কোটি টাকার মাদক ও মাদক তৈরির সরঞ্জামসহ এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে মাদক কারবারি ইউনুছ আলী পালিয়ে যায়। শনিবার বিকেলে ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলা সদর ইউনিয়নের বৈরাগী পাড়ায় অভিযান চালিয়ে এসব মাদক ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ সময় হাবিবা খানম নামে এক নারীকে আটক করা হয়। হাবিবা খানম জেলার পত্নীতলা উপজেলার গগণপুর গ্রামের মাদক কারবারি ইউনুছ আলীর স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত চার মাস আগে বৈরাগী পাড়ায় ধান ব্যবসায়ী আশরাফুল আলমের চারতলার নিচের ফ্লাট ভাড়া নেন মাদক কারবারি ইউনুছ আলী। চারতলার ওই ভবনের ওপরে থাকেন বাসার মালিক আশরাফুল আলম। এ ছাড়া বাসার অন্যান্য তলায় অন্য ভাড়াটিয়া থাকেন। বাসার মালিক বা অন্য ভাড়াটিয়ারা কেউ জানত না বাসার নিচের ফ্লাটে কি হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বদলগাছী থানা পুলিশ বিকেল ৫টার দিকে ওই বাসাটি ঘিরে ফেলে। এরপর পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া আসার পর বাসাতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আগেই ইউনুছ আলী সটকে পড়ে। প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ওই ভাড়া বাসা থেকে হেরোইন, হেরোইন তৈরির উপকরণ, ইয়াবা এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে। যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা টাকা।
বাসার মালিক আসাদ আলী বলেন, গত চার মাস আগে ভবনের নিচতলায় ইউনুছকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য ফ্ল্যাটেও ভাড়াটিয়া আছে। অন্য ভাড়াটিয়া বা আমরা বিষয়টি বুঝতে পারিনি তারা ফ্লাটে কি করত। পুলিশ আসার পর দেখছি ফ্ল্যাটে মাদকের কারবার। পুলিশ না আসলে কিছুদিনের মধ্যে হয়তো আরো বড় ক্ষতি হতে পারত।
বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ বলেন, ওই বাসা থেকে অ্যাম্পল, হেরোইন ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- সেখানে ইউনুছ আলী গোপনে নিজস্বভাবে এসব তৈরি করে সরবরাহ করত। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তার স্ত্রী হাবিবা খানমকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নওগাঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যেখানে প্রায় সাড়ে ৪ শ গ্রাম হেরোইন, হেরোইন তৈরির উপকরণ ও কিছু ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। দেখে মনে হয়েছে সেটা একটা ল্যাবরেটরি (পরীক্ষাগার)।
এসআই সোহায়বুর রহমান বলেন, উপজেলার গোল্লা গ্রামের শাহজাহান নামে এক ব্যক্তি প্রায় ৩/৪ মাস আগে ৮০ হাজার টাকা ইউনুছকে ধার দিয়েছিলেন। ইউনুছ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছিল। শুক্রবার (২৬ জুন) এ নিয়ে পাওনাদার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে বৈরাগী পাড়ায় ওই ভবনে তদন্ত যায়।
তিনি বলেন, আমরা যাওয়ার কিছু আগেই ইউনুছ বাড়ি থেকে চলে যায়। তার স্ত্রী হাবিবা খানমের কাছে টাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। আমরা যাওয়ার পর থেকেই হাবিবা ছটফট করছিল। আর বলছিল স্যার টাকা দিয়ে দেব। তারা যে বাসায় ভাড়া ছিল যাওয়ার পর একটি ঘরের দরজা খোলা ছিল। ওই ঘরটি একসময় বন্ধ করে দেয়। এরপর সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে ঘরের তালা খুলে দেখা যায় মাদক ও সরঞ্জাম। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ ৩ হাজার ৪ শ টাকা।
Leave a Reply