বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন
কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ।। কলাপাড়ায় নদী দখল-ভরাট কোন কিছুতেই থামছে না। বরং দখলদারদের তান্ডব চলছে ফ্রি-স্টাইলে। নদীর পাড়সহ পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করে পাইলিং দেয়া ছাড়াও তোলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। এসব রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তাগণ (তহশিলদার) থাকলেও তারা এখন চরম উদাসীন রয়েছেন। উল্টো তাদের যোগসাজশে চলছে নদীতীরসহ অর্ধেকটা দখল তান্ডব। প্রকাশ্যে দিনে-রাতে নদী দখল করা হলেও উচ্ছেদে কার্যকর কোন ভূমিকা নেই নদী রক্ষায় কলাপাড়া উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির। ফলে পরিবেশ-প্রতিবেশের স্বার্থে নদী রক্ষায় সরকারের প্রশংসনীয় কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্ধরমানিক নদী থেকে বহমান প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ বানাতিবাজার হয়ে রামনাবাদ মোহনার ঢোস পর্যন্ত শাখা নদীর দুই পাড় থেকে দখল তান্ডব চলছে। অন্তত পাঁচটি পয়েন্টে দেখা গেছে কোথাও স্থাপনা আবার কোথাও নদী তীর পাইলিং দিয়ে ভরাট করে ব্যবহার করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা বাজার এলাকায় দুই পাড়েই নদী তীর দখল করে তোলা হয়েছে স্থাপনা। একই দৃশ্য রামনাবাদ চ্যানেল থেকে আন্ধারমানিক মোহনা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটর দীর্ঘ শাখা নদীটির। চলছে সবচেয়ে বেশি দখল দৌরাত্ম। ওই নদীটিকে স্থানীয়রা শিববাড়িয়ার নদী বলে চেনেন। জেলেরা এ নামেই জানে নদীটিকে।
তারা এটিকে দূর্যোগকালীন পোতাশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। হাজার হাজার জেলেরা গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে আহরিত মাছ এ নদীর মহীপুর-আলীপুরে, চাপলী বাজার, লক্ষ্মীর বাজার, আশাখালীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আনলোড করে। করছে আড়তে বিক্রি। এমনিতেই গুরুত্বপূর্ণ এ নদীটি পলিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তারপরে বিভিন্ন স্থানে হাট-বাজার এলাকায় নদীতীর দখল করে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। আশাখালী, চরচাপলী বাজার, লক্ষ্মীর বাজার, মহীপুর-আলীপুর বাজার এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ইতোপূর্বে এ নদীটি পুনঃখননের জন্য সরকারিভাবে কয়েকদফা সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এ নদীটির মাইটভাঙ্গা নামক স্থানে আবার একাধিক ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। তাঁরা নদী তীরের মাটি কাটছে। করছে খাস এরিয়া দখল। আশপাশের বনভূমিও এ কারণে উজাড় হচ্ছে। কয়েক বছর আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ নদীটির দুই পাড়ের কিছু স্থাপনা অপসারণ করা হয়। কিন্তু আবার নতুন করে এখন দখল তান্ডব চলছে। এ নদী দুটো ছাড়াও কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক, সোনাতলা, চাকামইয়া নিশানবাড়িয়া, টিয়াখালী, তেগাছিয়া-শিববাড়িয়ার ভাড়ানির শাখা নদী, সাপুড়িয়ার ভাড়ানির শাখা নদী, খাপড়াভাঙ্গা নদী দখল করে কেউ চাষের জমি বানাচ্ছে, কেউ তুলছে স্থাপনা।
টিয়াখালী নদীর তীর দখল করে বালু ভরাটের কাজ চলছে নির্বিঘেœ। শত শত একর খাস জমিসহ নদীতীর দখল করা হয়েছে। এসব দেখে মনে হচ্ছে এই জনপদে নদী রক্ষায় কার্যকর কোন ভূমিকা নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নদী রক্ষায় উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি মো. মুনিবুর রহমান জানান, ইতোপূর্বেই বিভিন্ন নদী দখল করে তোলা ১৮৯ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নথী জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত মনিটরিংএর জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এমনকি নদী রক্ষায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।
Leave a Reply