বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং




এম.কে. রানা:  ‘গ্যাং কালচার’-এর নামে দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কিশোররা। স্কুল-কলেজপড়ুয়া এসব কিশোর জড়িয়ে পড়ছে খুন, ছিনতাই, মাদক, অপহরণ ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে। বরগুনায় ০০৭ নামের কিশোর গ্যাং লিডার নয়ন ব-ের হামলায় রিফাত হত্যার পর ‘গ্যাং কালচার’ আলোচনায় আসে। নগরীর বটতলা, আলেকান্দা, বগুরা রোড, মেডিকেল কলেজের সামনে, ভাটারখাল ও কেডিসি, কাউনিয়া এবং পলাশপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে ওঠার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বর্তমানে বরিশালে “আব্বা গ্রুপ” নামের একটি কিশোর গ্যাংয়ের খবর পাওয়া গেলেও বাহারী নামের আরো কিছু কিশোর গ্যাং বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের নানা জেলায় রয়েছে বলে জানা যায়। বেপরোয়া হয়ে ওঠা ভয়ংকর এই গ্রুপের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হলেও তাদের লাগাম টানা যাচ্ছে না।

মাঝেমধ্যে পুলিশ এদের জেলে পাঠালেও তাদের ‘মুরব্বিদের’ আশীর্বাদে মুক্ত হয়েই দ্বিগুণ উৎসাহে লিপ্ত হচ্ছে অপকর্মে। অপরাধ বিজ্ঞানীদের মতে, ‘পারিবারিক বন্ধন শিথিল, মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের দূরত্ব তৈরি এবং খেলাধুলা থেকে বিরত থাকা, সাংস্কৃতিক কর্মকা- কমে যাওয়া কিশোর অপরাধ সংগঠিত হওয়ার অন্যতম কারণ। বরিশালে কোন কিশোর গ্যাং যাতে গড়ে উঠতে না পারে সেলক্ষ্যে ইতিমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণপরবর্তী কার্যক্রম চলছে বলে জানান বরিশালের মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার)। তিনি বলেন, অপরাধ কর্মকা-ে যারা জড়িত তাদেরকে কোন ধরণের তদ্বিরে ছাড় দেয়া হবে না।

সূত্রে জানা যায়, কিশোর সন্ত্রাসীদের নিয়ে গঠিত ‘আব্বা গ্রুপ’টি মূলত নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডকেন্দ্রিক। পরেশ সাগরের মাঠ, বাংলাদেশ ব্যাংক রোডের মুখে, জিলা স্কুল মোড় এবং সিটি কলেজ ঘিরেই তাদের আড্ডা ও অপকর্মের স্থল। ‘আব্বা গ্রুপের’ নেতৃত্বে থাকা সৌরভ বালা ও তানজিম নামের দুই বখাটে যুবক একসময় জেলা ছাত্রদলের এক যুগ্ম আহ্বায়কের ছত্রছায়ায় ছিল। রাজনৈতিক বাস্তবতায় ভোল পাল্টে গ্রুপটি ছাত্রলীগের অনেক নেতার আনুকূল্য পাওয়ার চেষ্টা করলেও কেউ তাদের গ্রহণ করেনি। কলেজকেন্দ্রিক নানা অপকর্মের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার পুলিশ এই গ্রুপের সৌরভ বালাকে গ্রেফতার করে। এ নিয়ে কথা হয় সিটি কলেজের ক্যাশিয়ার এসএম সাইদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে কলেজের অফিস কক্ষের আলমারি ভেঙে টাকা লুট করেছিল তারা। ২৯ জুলাই ওই মামলায় সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পরই সৌরভ বালারা ক্যাম্পাসে ঢুকে হট্টগোল করে। খবর পেয়ে পুলিশ সৌরভ বালা ও ইয়ামিন হোসেন জুয়েলসহ তিন যুবককে আটক করে। কলেজ কর্তৃপক্ষ হট্টগোলের ওই ঘটনায় মামলা না করায় পুলিশ তাদের মেট্রো অধ্যাদেশে আদালতে পাঠায়।

এরপর ৩১ জুলাই আদালত থেকে ছাড়া পেয়েই দলবল নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে সৌরভ, রুবেল ও ইয়ামিনরা অধ্যক্ষকে কুপিয়ে জখম করে। পরে অধ্যক্ষকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলার পর গ্রুপের রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেছেন, হামলাকারী বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, এই গ্রুপের সদস্যরা সিটি কলেজের একটি রুম দখলে নিয়ে ‘টর্চার সেল’ করে সেখানে মাদক সেবন থেকে শুরু করে সব অপকর্মই করা হচ্ছিল। ধরে এনে এই কক্ষে চালানো হতো নির্যাতন। এছাড়া কলেজছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা, সিগারেট খেয়ে মেয়েদের মুখে ধোঁয়া ফেলা, জোর করে ছাত্রীদের সিগারেট খাওয়ানোর অভিযোগ নিত্যনৈমিত্যিক। বাইরে থেকে মেয়ে নিয়ে আসার ঘটনাও ঘটেছে। তবে কর্তৃপক্ষ কিংবা অভিভাবকরা এসব দেখে না দেখার ভান করায় তারা দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে।

কলেজের ক্যাশিয়ার সাইদুর রহমান জানান, সাধারণ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি। মান-সম্মানের ভয়ে অনেকের মধ্যেই তাদের এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। আব্বা গ্রুপটি আগে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে এলেও এটি প্রথম আলোচনায় আসে ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল। জিলা স্কুলের ছাত্রদের সঙ্গে একটি বিরোধের জেরে ওইদিন সন্ধ্যায় আব্বা গ্রুপের প্রায় ২০ জন সদস্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামে। তারা জিলা স্কুলের মোড় থেকে ব্রাউন কম্পাউন্ড পর্যন্ত সড়কে বহুসংখ্যক গাড়ি ভাংচুর করে ও কয়েকটি বাড়িতেও হামলা চালায়।

এ সময় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করে তারা। ওই ঘটনায় স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ সৌরভ বালাকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে। এ সময় স্কুলছাত্র সাগর হাওলাদার, রিফাতুল ইসলাম, তানভির আহসান জিয়াদ, শোভন বিশ্বাস, তৌসিক হাওলাদার, নাজিম উদ্দিন রাতুল, আবদুল¬াহ আল তামিম এবং আরমান শরীফকে আটক করে পুলিশ। আটক সবাই নগরীর বিএম স্কুল, মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং একে ইন্সটিটিউটের ছাত্র ছিল। কিছুদিন পর জেল থেকে বেরিয়েই গ্রুপের সদস্যরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সবার মুখে মুখে চলে আসে এই আব্বা গ্রুপের নাম। চাঁদা না পেয়ে এই গ্রুপের ২৫-৩০ জন সদস্য ওই বছর ২৪ অক্টোবর নগরীর গির্জা মহল¬ায় মোবাইলের ফোনের দোকান ভাংচুর করে এবং দোকান মালিক সোহেল ও জুয়েলকে বেধড়ক পেটায়।

‘আব্বা গ্রুপ’ ছাড়াও বরিশাল বিএম কলেজে আজমল হোসেন রুমনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। গ্রুপের প্রধান রুমনের বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলাও আছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে কলেজ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিস্তর অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হলের ১০১নং কক্ষে বসবাসরত আজমল হোসেন রুমনের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে দোকান ভাংচুরের অভিযোগ ছাড়াও তার রুমে প্রায়ই বসে মাদক সেবনের বিশাল আড্ডা। এক ছাত্র জানান, প্রতিদিন গড়ে এই হলেই ১৫ হাজার টাকার ইয়াবার চালান আসে। এর নিয়ন্ত্রণ করছেন আজমল হোসেন। বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় তার কার্যক্রম চলছে বলে অভিযোগ। ফলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। এর পাশাপাশি নগরীর বটতলা, আলেকান্দা, বগুরা রোড, মেডিকেল কলেজের সামনে, ভাটারখাল ও কেডিসি, কাউনিয়া এবং পলাশপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে ওঠার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় আকস্মিকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে উঠতি কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা। বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল প্রকাশ কুমার মালাকার গত ২৪ জুলাই ওই এলাকার কিশোর গ্যাং বাবু বাহিনীর হামলায় রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান আশরাফুজ্জামান ওরফে বাবু ও তার সহযোগী মেহেদী হাসান সিকদারকে আসামি করা হয়েছে।

বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, কলেজ চলাকালীন বহিরাগত কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান আশরাফুজ্জামান বাবু ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ২৪ জুলাই বেলা ১১টার দিকে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করায় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মুনসুর তাদের বের হয়ে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবু ও তার সহযোগীরা মুনসুরকে গালিগালাজ করলে সে (মুনসুর) অফিসে এসে বিষয়টি ভাইস প্রিন্সিপাল প্রকাশ কুমার মালাকারকে জানালে তিনি ক্লাস চলাকালীন সময়ে বাবু ও তার সহযোগীদের কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করার জন্য নিষেধ করেন। এ সময় বাবু ও তার সহযোগীরা ভাইস প্রিন্সিপালের ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।

এ খবর কলেজে ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করলে সন্ত্রাসী বাবু ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কিশোর গ্যাংয়ের হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন। পরে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ ওই দিনই অভিযান চালিয়ে হামলাকারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য মেহেদী হাসান সিকদারকে গ্রেফতার করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, শিক্ষকের ওপর হামলাকারী অন্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অপরদিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচন চলাকালীন ২৫ জুলাই দুপুরে একটি মসজিদের ভেতর থেকে ধারালো অস্ত্রসহ ৯ কিশোর সন্ত্রাসীকে আটক করেছেন র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা। আটককৃতরা হলোÑ মেহেদী হোসেন, মাইনুল ইসলাম, মাহাদী হাসান সোয়েব, সাকিব হোসেন, আকাশ হাওলাদার, রুবেল খন্দকার, শিপন হাওলাদার, হাসান আকন ও মৃদুল ইসলাম। যাদের বেশির ভাগই বরিশাল সদরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এর আগে ওই দিন সকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফিরোজ আলম রনির চাচাতো ভাই নজরুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করে কিশোর সন্ত্রাসীরা। এর পরপরই র‌্যাবের একটি টিম অভিযান চালিয়ে ওই ওয়ার্ডের একটি মসজিদের ভেতরে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ অবস্থান করা ৯ কিশোর সন্ত্রাসীকে আটক করে। আটককৃতরা এক প্রার্থীর পক্ষে ভাড়াটিয়া হিসেবে ওই এলাকায় অবস্থান করছিল।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই সব কিশোর সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে সফলতা অর্জন করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ১০ জন উঠতি কিশোর সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিটি কিশোর অপরাধীর পেছনে রয়েছে মাদক সংশি¬ষ্টতার অভিযোগ। এ বিষয়ে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশালের সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, কিশোর অপরাধ হয় পারিবারিক বন্ধন নড়বড়ে হয়ে যাওয়া, সন্তানের প্রতি বিধিনিষেধ কমে যাওয়ার কারণে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এরা ওই দলের শক্তি বা পাওয়ার অর্জন করে গ্রুপ তৈরি করে। অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলছে, ‘পারিবারিক বন্ধন শিথিল, মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের দূরত্ব তৈরি এবং খেলাধুলা থেকে বিরত থাকা, সাংস্কৃতিক কর্মকা- কমে যাওয়া কিশোর অপরাধ সংগঠিত হওয়ার অন্যতম কারণ।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই কিশোর গ্যাংদের অপরাধমূলক কর্মকা-ে সর্বদা বাধা দিয়ে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। কিশোর অপরাধ কমাতে খেলার মাঠ বৃদ্ধি করতে হবে, সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের প্রতি কিশোরদের উত্সাহ প্রদান করতে হবে, অভিভাবকদের দায়িত্ব নিতে হবে, কিশোর-তরুণদের গঠনমূলক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত করতে হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান বলেন, কিশোররা যখন অপরাধ করে, তখন তাদের অপরাধীর চোখেই দেখি। সে যে ধরনের অপরাধ করবে, সেই রকম আইনে তার বিচার হবে। কোন ধরণের তদ্বিরে তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সব এলাকায় বাড়তি নজরদারি রাখা হচ্ছে যেন বরিশালে কোন কিশোর গ্যাং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে না পারে। গ্যাং গ্রুপের সদস্য হয়ে যারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়াচ্ছে তাদের আমরা আইনের আওতায় আনছি। কিন্তু তাদের সংশোধনের মূল দায়িত্ব পরিবারের। তিনি বলেন, কোন এলাকায় কিশোরদের সংঘবদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেলে আমাদের পক্ষ থেকে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

শুধুমাত্র বরিশাল নগরীই নয় মফস্বল শহর এবং উপজেলায় কমবেশি কিশোরদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সামাজিকভাবে অনুশাসনের মাধ্যমে আমরা এবং অভিভাবকদের নিয়ে সামাজিকভাবে অপরাধ কর্মকা- প্রতিরোধ করছি। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ মাদ্রাসাগুলোতে প্রতিমাসে মাদক, জঙ্গীবাদ, ইভটিজিংয়ের পাশাপাশি কিশোর গ্যাংয়ের কুফল সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের অবহিত করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমেও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন বয়সী ও শ্রেনী পেশার মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।

সূত্রমতে, ২০১৩ সালের শিশু আইন অনুযায়ী ৯ থেকে অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের কোনো শিশু অপরাধে জড়িয়ে পড়লে তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো উচিত। বাংলাদেশে কিশোর সংশোধন কেন্দ্র আছে দুইটি। একটি গাজীপুরের টঙ্গীতে অন্যটি যশোরের পুলেরহাটে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD