শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধি: সাত বছরের শিশু আফ্রিদি এখনও ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে ওঠে। বাবাকে নৃশংস কোপানোর ভয়াল দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে ওঠে। পায়ের গোড়ালি কেটে ফেলার নৃশংসতা একটি মুহুর্তের জন্য আড়াল করতে পারছেনা এই অবুঝ শিশু। বাবাকে রক্ষায় চিৎকার করায় তাকেও খালের পানিতে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। বাবা শাহআলম মাস্টার ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
কোনদিন স্বাভাবিক জীবনে না ফেরার শঙ্কায় এ শিশু। একই শঙ্কায় শাহআলম মাস্টারের অপর দুই সন্তান এইচএসসি উত্তীর্ণ মেধাবী শান্তা ও অষ্টম শ্রেণির রিমির। স্কুল-কলেজে একা যেতে পারছেনা। নিরাপত্তাহীনতায় তাদেরকে সঙ্গে পরিবারের কেউ না কেউ যেতে হচ্ছে। এমনকি দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তাহীন রয়েছেন শাহআলম মাস্টারের বড় ভাই জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ গোটা পরিবারের সদস্যরা।
নিরাপত্তা চেয়ে এবং বাকি আসামিসহ মূল হোতা নজরুল-আইয়ুব আলী চক্রের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবে লিখিতি বক্তব্য পাঠ করেন জাহাঙ্গীর আলম মাস্টার। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জের এ নৃশংস সন্ত্রাসের ঘটনা সকলের মুখে মুখে আলোচিত হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২৫ আগস্ট দিনের বেলা বোনের বাড়িতে যাওয়ার সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বেধড়ক কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। কেটে দেয় পায়ের গোড়ালি বরাবর। এদৃশ্য দেখে সঙ্গে থাকা শিশু সন্তান আফ্রিদি চিৎকার করলে তাকেও হত্যার জন্য খালে ফেলে দেয়।
শাহ আলমের পা কাটা এবং হত্যা চেষ্টা মামলায় চার আসামি গ্রেফতার হয়েছে। পলাতক রয়েছে ১৭ আসামি। ৫৮ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে শাহ আলম মাস্টারকে অন্তত ২৫ টি মামলায় ইতোপুর্বে আসামি করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের চাওয়া ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় জালিয়াতি করে শাহ আলমের ক্রয়কৃত সম্পতি দলিল করে একটি মার্কেট” নির্মাণ করে, যার নাম “হঠাৎ মার্কেট”। শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ওই আসামিদের বিরুদ্ধে হিন্দু বাড়িতে হামলা, লুটপাট, ধর্ষণ, চাঁদাবাজীসহ অন্তত এক ডজন মামলা রয়েছে । তারা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর বরিশাল শের-ই-বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ আলম বর্তমানে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। হুমকিতে রয়েছে তার পরিবার। তাঁর অভিযোগ, সন্ত্রাসী আইয়ুব ও নজরুল প্রতিনিয়ত তাদের হুমকি দিচ্ছে। শাহ আলম মাস্টারের পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ভাই-বোনের পরিবারের সদস্যরা শঙ্কিত রয়েছেন। দিন কাটছে চরম উৎকন্ঠায়। কলাপাড়া থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শঙ্কার কিছুই নেই। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply