মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
এম. কে. রানা॥ আসন্ন ঈদ উল আয্হা উপলক্ষে বরিশাল মেট্রেপলিটন পুলিশের ঈদোত্তর আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্ততি সভায় নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তোপের মুখে পড়েন লঞ্চ মালিকরা। সভার প্রায় অর্ধেক সময় আলোচনা হয়েছে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের লঞ্চ মালিকদের অসততা নিয়ে। আজ সোমবার (৫ আগষ্ট) নগরীর চাঁদমরিস্থ পুলিশ অফিসার্স মিলনায়তনে ঈদোত্তর আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্ততি সভায় সভাপতিত্ব করেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুউদ্দিন খান। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, লঞ্চ ও বাস মালিক শ্রমিক-সংগঠনের প্রতিনিধি, পশুরহাটের ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের প্রতিনিধিরা মতবিনিময় অংশগ্রহন করে ঈদ উল আয্হা নিয়ে তাদের প্রস্ততির কথা জানান।
বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চ গুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম-অসততার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যাত্রী জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে নিচ্ছে এ রুটের ল মালিকরা। বিশেষ করে বছরের দুটি ঈদ উৎসবে নানান কৌশলে কয়েকগুন মুনাফা অর্জনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কেবিনের টিকেট কালোবাজারে বিক্রি, নদীর মধ্যে একাধিক লঞ্চের মধ্যে আগে যাওয়ার প্রতিযোগীতা, যাত্রী নিরাপত্তায় আনসার না রাখা ও যাত্রীদের অধিক মূল্যে মানহীন খাবার পরিবেশন।
সভায় একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করেন, মাঝনদীতে লঞ্চ গুলো যেভাবে আগে যাওয়ার প্রতিযোগীতা করে তাতে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ প্রসঙ্গে বন্দর কর্মকর্তা বলেন, প্রতিযোগীতায় লিপ্ত অভিযুক্ত নৌযানের মাষ্টার-ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হলে উল্টো তাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রাণি করেন লঞ্চ মালিকরা।
এসব অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে প্রথমে কীর্তণখোলা লঞ্চের মালিক ফেরদৌস বলেন, আনসারদের আগ্নেয়াস্ত্রের নিরাপত্তা দিতে না পারায় তারা লঞ্চে আনসার রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। পরে সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানীর মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ৬ জন আনসারের প্রতিজনকে ১৮-২০ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। এত টাকা ব্যয়ের সামর্থ মালিকদের নেই, তাই আনসার রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। টিকেট কালোবাজারী ও ষ্টাফ কেবিন ভাড়া দেয়ার দায় চাপান নৌযান শ্রমিকদের ওপর। এক পর্যায়ে মালিকরা বলেন, শ্রমিকরা তারা নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন না।
বিআইডবিøউটি’র বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় একটি লে ও আনসার রাখা হয়না। বর তাদের কর্মচারীদের আনাসারের পোশাক পড়িয়ে নিরাপত্তাকর্মী নামে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারনা করা হচ্ছে। লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে টিকেট কালোবাজারীর অভিযোগ করেন বন্দর কর্মকর্তা।
সিটি করপোরেশনের স্যানিটরী ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তারা একাধিকবার সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন লঞ্চের খাবারের মান ভালনা। মূল্য রাখা হয় অনেক বেশী। এর কারন জানতে চাইলে ক্যান্টিনের দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন, প্রতিটি রাউন্ড ট্রিপের জন্য মালিকপক্ষকে ১৫ হাজার টাকা ক্যান্টিন ভাড়া দিতে হয়। এসময় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ল মালিকদের অনভিজ্ঞ নয় অভিজ্ঞ সারেং মাস্টার দ্বারা লঞ্চ চালানোর কথা বলেন যাতে করে নিরাপদে ঘড়মুখো যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারে সেজন্য তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
সভায় জানানো হয়, ঈদ উল আযাহায় মেট্রোপলিটন ৪ থানা এলাকায় ১৯টি পশুর হাট বসবে। প্রতিটি হাটে ২টি করে জাল টাকা সনাক্তকরন মেশিন সরবরাহ করবে মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরীর নিরাপত্তায় পুলিশ তিনস্তরের ৯ শত পোষাকধারী ও সাদা পোষাকধারী সহ বিভিন্ন সংস্থার পুলিশের সদস্যরা নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের কথা জানানো হয় ওই সভায়। এছাড়া বরিশালে বড় আকারের ৬ টি ঈদ জামাত সহ ১ শত ৩২ টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে বিভিন্ন বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সভায় বলেন, বর্তমান শোকাবহ আগস্ট মাসে পরিস্থিতি ভাল থাকার পরও তাদের কঠোর নজরধারী রয়েছে বিভিন্নস্থানে।
Leave a Reply