মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বাবুগঞ্জে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে সততা ট্রেডার্স নামের একটি বালু ব্যবসায়ী চক্র সন্ধ্যা নদীর তলদেশ কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে সন্ধ্যা নদীতে ৫ টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের স্থগিত নির্দেশ থাকা সত্বেও প্রভাবশালী চক্রটি ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকার সন্ধ্যা নদী থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে।
বেশ কয়েকদি আগে অভিযানে চালিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের হাতেনাতে আটক করে আবার ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে থানা পুলিশরে বিরুদ্ধে। বীর শ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মঞ্জুরু রহমান বাচ্চু বলেন, বীর শ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি যাদুঘর এবং কলেজ সংলগ্ন এলাকা ছাড়া আরো বালু উত্তোলনের অনেক যায়গা রয়েছে।
রহিমগঞ্জ এলাকার আশপাশের যেখান থেকেই বালু উত্তোলন করা হউকনা কেন তার প্রভাব বীর শ্রেষ্ঠর নামে প্রতিষ্ঠন ও বসতবাড়ির উপর পরবে। তিনি আরো বলেন প্রশাসনের অবহেলার কারণে সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলন এভাবে চলতে থাকলে যে কোনো সময় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নামে প্রতিষ্ঠত জাদুঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাবে। এ অবস্থায় গত ২৩ মে বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্তান হাইকোর্টের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোসাদ্দেক বিল্লাহ্ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্মৃতি জাদুঘর, পাঠাগারসহ অন্যান্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন ঠেকাতে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন।
ফলে বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমোদনের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্মৃতি জাদুঘর, পাঠাগারসহ অন্যান্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন ঠেকাতে বালু উত্তোলন বন্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের স্মৃতি জাদুঘরসহ স্থাপনা রক্ষায় বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম তারেকের আবেদনটি ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল মেসার্স সততা ট্রেডার্স সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি পায়। এরপর তারা নদী থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে। এতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্মৃতি জাদুঘরসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হুমকির মুখে পড়ে।
এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সততা ট্রেডার্সের পক্ষে মোঃ ইমন হোসেন ও মোঃ রুবেল বেপারীর নেতৃত্বে প্রতিদিন নদীর তলদেশ থেকে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। যার ফলে সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে অচিরেই নদী গর্ভে হারিয়ে যেতে পারে বীর শ্রেষ্ঠ ক্যাপপ্টেন মহি উদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘরসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজলো নির্বাহী অফিসার সুজিত হাওলাদার বলেন উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায় বালু উত্তোলণ সম্পূর্ণ বে-আইনি। আমি খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে সততা ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
Leave a Reply