মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:২৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল সদর উপজেলার পশ্চিম চাঁদপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দানকৃত জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মাসুদ চাপরাশিকে ট্যাডা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ সময় এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ট্যাডা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে সেগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম চাঁদপুরা বৈরাগী বাড়ির পোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর মাসুদ মামলা দায়ের করতে গেলে বন্দর থানায় ওসি মোস্তফা কামাল মামলা নিতে গড়িমসি করেন।
হামলার শিকার প্রধান শিক্ষক আতিকুজ্জামান লিটন জানান, ১৯৭৬ সালের ২৯ অক্টোবর দানপত্র দলিলের মাধ্যমে ওই এলাকার হারুন চাপরাশি, আঃ খালেক চাপরাশি, আঃ সত্তার চাপরাশি, মোতালেব চাপরাশি, মোসলেম চাপরাশি ও জলিল চাপরাশি স্কুলের নামে ৬০ শতাংশ জমি দলিলের মাধ্যমে দানপত্র করে দেন। পরে ১৯৯৬ সালে পশ্চিম চাঁদপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারী স্কুলটি সরকারি ঘোষণা করা হয়।
সরকারি স্বীকৃতি লাভের পর সরকার স্কুলের নতুন ভবণ নির্মানে ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করে। বরাদ্দ পেয়ে স্কুলের নির্মান কাজ শুরু করলে মৃত হারুন চাপরাশি ছেলে জহিরুল ইসলাম রিপন ও আবুল হাসানাত স্কুলের দানকৃত জমি দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এ নিয়ে বিভিন্ন সময় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাথে তাদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জহিরুল ও আবুল হাসানাত জমি দখল নিতে আদালতে মামলা দায়ের করে।
মামলায় আদালত উভয়ের কাগজপত্র দেখে তাদের মামলা খারিজ করে দিয়ে স্কুলের পক্ষে রায় দিয়ে দেন। কিন্তু তা মেনে নিতে পারেনি জহিরুল ও আবুল হাসানাত। তারা ওই জমি দখল করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে তারা ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর ওই জমি দখল করতে স্কুলের মধ্যে রাতের আধারে টিনের ঘর নির্মান করে।
বিষয়টি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সদস্যরা সদর উপজেলা ইউএনও হুমায়ুন কবিরকে অবহিত করার পর বরিশাল মেট্রোপলিটন উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোয়াজ্জেম হোসেন ভূইয়ার নেতৃত্বে বন্দর থানার ওসি মোস্তফা কামালের সহাতায় ওই টিনের ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। এভাবেই জহিরুল ও আবুল হাসানাত পরস্পর যোগসাজসে স্কুলের জমি নিতে ব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করার চেষ্টা চালায়। তারা স্কুলের নির্মান কাজে প্রতিনিয়ত বাধার সৃষ্টি করে।
এছাড়া স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সদস্য মাসুদ চাপরাশি ও প্রধান শিক্ষক আতিকুজ্জামান লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত মঙ্গলবার জহিরুল ও তার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রবিউল অজ্ঞাত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে ৩টি মোটরসাইকেলযোগে এসে মাসুদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়।
এ সময় তারা মাসুদকে হত্যার উদ্দেশ্যে ট্যাডা দিয়ে কোঁপ দেয়। তাদের ডাকচিৎকারে এলাকাবাসীরা এগিয়ে আসলে জহিরুল ও রবিউলসহ সন্ত্রাসীরা তাদের ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল ও ট্যাডা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply