রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ভারতের হরিয়ানার মেয়ে। পরিবার বেশ রক্ষণশীল, সেখান থেকেই হয়ে উঠেছিলেন সত্তর দশকের সুপারহিট নায়িকা, গায়িকা।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, পণ্ডিত যশরাজের ভাইজি বলিউডের সুপারহিট ছবির গায়িকা-নায়িকা। এই নায়িকার দুই ভাই সুরকার যতীন-ললিত।
তিনি বলিউড গায়িকা, অভিনেত্রী সুলক্ষ্মণা পণ্ডিত। তার বোন বিজয়েতাও ছিলেন ছবির নায়িকা। বাংলা ছবি ‘অমর সঙ্গী’-তে কাজ করেন বিজয়েতা।
সুলক্ষ্মণা ১৯৬৭ সালে বলিউডে ডেবিউ করেন গায়িকা হিসাবে। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ২১টি ছবিতে গান গেয়েছেন তিনি। অভিনয় করেছেন ৫০টি ছবিতে। ‘বেকারে দিল তু গ্যয়া’, ‘খুশিয়ো সে ভরে উও তারানে’, ‘বন্ধি রে কাহে প্রীত’ গানগুলো ছিল সেই সময়ের সুপারহিট গান।
নিজের ছবিতে অভিনয় গান, দুই’ই করতেন তিনি। ‘হট’ শব্দটা বলিউডের বেশ কিছু ম্যাগাজিন তার সম্পর্কে সেই সময় ব্যবহার করেছিল। আবেদনময়ীও বলা হত তার পর্দায় উপস্থিতিকে।
১৯৭৫ সালের ছবি সংকল্পে ‘তু হি সাগর হ্যায়, তু হি কিনারা’, ‘ঢুন্ঢতে হ্যায় তু কিসকা সাহারা’ গানের জন্য পুরস্কারও পান তিনি।
হেমা মালিনী ও রেখার প্রতিদ্বন্দ্বী বলা হত তাকে সেই সময়। রীনা রায় ও নীতু সিংও সেই সময় অভিনয় করেছেন। তিনি পাল্লা দিয়ে কাজ করেছেন ছবিতে।
‘রাহগীর’ ছবিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সুরকার ও সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, সেই সময় তিনি সুলক্ষ্মণাকে অভিনয়ে আসার জন্য সুপরামর্শ দিয়েছিলেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন সুলক্ষ্মণা একটি সাক্ষাৎকারে।
বাবা চলে যাওয়ার পর বড় বাড়ির বড় সন্তান হিসাবে রুটিরুজির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। সেই সুলক্ষ্মণাই প্রেমে পড়ে সব কাজ ভুলে যেতে লাগলেন।
অভিনেতা সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে ‘উলঝন’ ছবিটি করার সময় তার প্রেমে পড়ার কথা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন অভিনেত্রী। সাতটি ছবিতে কাজ করেন তারা। তবে সঞ্জীব পছন্দ করতেন হেমাকে। তাই সুলক্ষ্ণণার ভালবাসার কথাকে গুরুত্ব দেননি, জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
অভিনেতা সঞ্জীব কুমার অবিবাহিত ছিলেন। অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণেই বিখ্যাত অভিনেতা মাত্র ৫০ বছর বয়সে অসুস্থতার কারণেই মারা যান, এমনটাই প্রকাশিত হয়েছিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। তারপর থেকে অভিনেত্রীও অবসাদগ্রস্ততায় ভুগতেন।
‘আপনাপন’, ‘ওয়াক্ত কি দিওয়ার’, ‘খণ্ডন’, ‘সংকোচ’, ‘ধর্ম কাঁটা’, ‘চেহরা পে চেহরা’, ‘রাজ’, ‘কালা সূরজ’, একের পর এক হিট ছবির নায়িকা নিজে বিয়ে করেননি কখনও। সঞ্জীবের মৃত্যুর পর থেকেই কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন। ঘরে বন্দি থাকতেন।
নিজের ফ্ল্যাট ঠিক করার খরচটুকুও তার ছিল না। একা সময় পর কাজ না করতে করতে প্রচুর ধার-দেনা করতে হয় তার। ২০০৫ সালে অভিনেতা জিতেন্দ্রর সহায়তায় ফ্ল্যাট বিক্রি করে ঋণ শোধ করেন নায়িকা।
বোন বিজয়েতা ও তার স্বামী সঙ্গীত পরিচালক আদেশ শ্রীবাস্তব এগিয়ে আসেন তাকে সাহায্য করতে। পাশে ছিলেন ভাইয়েরাও। পুরনো ফ্ল্যাট বিক্রির টাকায় নতুন ছোট ফ্ল্যাট কিনে তা ভাড়া দেন সুলক্ষ্মণা।
বাড়ির শৌচাগারে পড়ে গিয়ে হিপ বোন ভেঙে যায় তার। চার বার অস্ত্রোপচারের পর হাঁটা শুরু করেন অভিনেত্রী। কিন্তু আদেশও মারা যান ক্যানসারে। ভক্তিমূলক একটি অ্যালবামের কাজ করছিলেন শ্যালিকার জন্য। তা বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সুলক্ষ্মণা একা চলাফেরা করতে পারেন না। প্রায় অথর্ব। এখন বোনের সঙ্গেই থাকেন তিনি। তাকে দেখাশোনা করার জন্য বিশেষ লোকও রয়েছে।
Leave a Reply