রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি সংবাদদাতা: দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পা হারানো ঝালকাঠি হরচন্দ্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাবরিনা আক্তার সেফা এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.৩৩ পেয়েছে। ক্যান্সারের সাথে লড়াই করা সাবরিনা মনোবল অটুট রেখে এ ফলাফল করেছে। সে বড় হয়ে কলেজশিক্ষক হতে চায়।
সাবরিনা নলছিটি বড়ৈকরণ গ্রামের কৃষক আবদুল কাদেরের মেয়ে। তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দুরত্ব চার কিলোমিটার। মাঝে ট্রলারে পার হতে সুগন্ধা নদী। ২০১৫ সালে বর্ষাকালে একদিন বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ট্রলারঘাটে পিছলে পড়ে সে পায়ে ব্যাথা পায়। কিছুদিন পর পায়ের ব্যাথা তীব্রতর হতে থাকে। পরের বছর তাঁর পায়ে ক্যান্সার ধরা পরে। ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ক্যন্সার হাসপাতালে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে তাঁর উরু থেকে বাঁ পা কেটে ফেলা হয়। তখন সে দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এরপর ক্যন্সারের সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়েছে। প্রতিমাসে একটি ক্যামো দিতে হতো। বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বাচানো টিফিনের টাকা ও সমাজের বিত্তবানদের সাহয্য ও বাবার জমি বিক্রির টাকায় তাঁর চিকিৎসা চলে। তাঁর চিকিৎসায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখনো সে প্রায়ই অসুস্থ থাকে। এ জন্য ২০১৮ সালে তাঁর এসএসসি পরীক্ষা দেয়া হয়নি। এর মধ্যেও সে লেখা পড়া চালিয়ে এ ফলাফল করেছে।
এ বিষয়ে সাবরিনা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সহপাঠি ও বাবা-মা লেখপাড়া চালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। সে বড় হয়ে শিক্ষকতা করতে চায়।
সাবরিনার বাবা আবদুল কাদের বলেন, মেয়েটিকে প্রতিমাসে কেমোথেরাপি দিতে হয়েছে। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে আমাকে হিমশিম খেতে হয়েছে। তাঁর পরেও আমার মেয়ের ভালো ফলফলে আমি খুশি।
ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তৌহিদ হোসেন খান বলেন, মেয়েটি মনোবল না হারিয়ে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে ভালো ফলাফল করেছে। তাকে নিয়ে আমরা গর্বিত।
Leave a Reply