বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি: হালনাগাদ তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় আড়াই মাস ধরে মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা বরগুনার আমতলী উপজেলার জেলেরা বিশেষ ভিজিএফ’র চাল পায়নি। এতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানববেতর জীবন যাপন করছে। দ্রুত চাল বিতরণের দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
আমতলী উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানাগেছে, জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম গত বছর নভেম্বর মাসে শুরু হয়। শেষ হবে এ বছর ৩০ জুন। এ ৮ মাস মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ সহায়তা দিচ্ছেন সরকার। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত এ চার মাস শুধু ইলিশ মাছ ধরা জেলেদের এ সহায়তা দেয়া হবে। প্রতি মাসে জেলেরা ৪০ কেজি করে চাল পাবেন। উপজেলায় ৭ হাজার ১১০ জন জেলে রয়েছে। এর মধ্যে গুলিশাখালী, চাওড়া, আমতলী সদর, আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন ও আমতলী পৌরসভার ইলিশ মাছ ধরা ১ হাজার ৫৭৩ জন জেলেকে এ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাল নাগাদ জেলেদের তালিকা প্রস্তুতপূর্বক চাল বিতরণের নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিউটন বাইন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমকে তালিকা প্রস্তুত করে জমা দেয়ার চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু গত আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলা মৎস্য অফিস হাল নাগাদ জেলেদের তালিকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে জমা দেয়নি।
এদিকে উপজেলা মৎস্য অফিস গুলিশাখালী, চাওড়া, আমতলী সদর, আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন ও আমতলী পৌরসভাকে জেলেদের হাল নাগাদ তালিকা প্রস্তুত করে জমা দেয়ার চিঠি দেয়। কিন্তু তারা তালিকা প্রস্তুত করে জমা দিতে বিলম্ব করেছে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা। চারটি ইউনিয়ন পরিষদ তালিকা দিলেও আমতলী পৌরসভা এখনো তালিকা জমা দেয়নি। তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় গত আড়াই মাস ধরে জেলেরা বিশেষ ভিজিএফ’র চাল পায়নি। চাল না পাওয়ায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছে। দ্রুত চাল বিতরনের দাবী জানিয়েছেন জেলেরা।
বালিয়াতলীর গ্রামের জেলে সাইদুর রহমান জানান, গত ছয় মাস ধরে পায়রা নদীতে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। এ উপলক্ষে সরকার আমাদের চার মাস বিশেষ ভিজিএফ চাল দেয়ার কথা থাকলেও কোনো জেলে এখনোও চাল পায়নি। এতে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিস চাওয়া মাত্রই হাল নাগাদ জেলেদের তালিকা মৎস্য অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও জেলেরা বিশেষ ভিজিএফ’র চাল পায়নি।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, চারটি ইউনিয়নের হালনাগাদ তালিকা পেয়েছি। পৌরসভার তালিকা পাইনি। সকল তালিকা পেলে দ্রুত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে জমা দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিউটন বাইন বলেন, জেলেদের তালিকা না পাওয়ায় চালের ছাড়পত্র দিতে পারছি না। তালিকা পেলে দ্রুত চালের ছাড়পত্র দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরোয়ার হোসেন বলেন, হালনাগাদ তালিকা পেলেই দ্রুত জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে।
Leave a Reply