বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ন
আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির অভিযোগ
গৌরনদী প্রতিনিধি “গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ও খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির অখিল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় চত্বরের গাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ অখিল দাস নিয়মবর্হিবূতভাবে বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করেন। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা নাসরিন আজ শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে গাছ জব্দ করে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামাল হাওলাদার ও ৭নং ওয়ার্ড আ.লীগ সভাপতির কালু হাওলাদারের জিম্মায় দেন। বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন জানান, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে পুরানো মেহগনি, রেন্ট্রিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। গত ২২ জুলাই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্য শিক্ষাবোর্ডে পাঠানো হয়। এই সুযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারন সম্পাদক অখিল চন্দ্র দাস বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে যোগসাজসে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয় চাত্বরের ৭টি মেহগনি ও রন্ট্রি গাছ স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ী মো. সামু ফকিরের কাছে এক লক্ষ দশ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আ.লীগের ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি ও ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমা-ার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৬৫) অভিযোগ করেন, ৬০/৭০ বছর পূর্বে বিদ্যালয় চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধ শতাধিক গাছ লাগানো হয়। যেই গাছগুলো বর্তমানে সম্পদে পরিনত হয়েছে।
বর্তমান পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন কমিটির অনুমোদন হয়ে আসার আগেই তরিঘরি করে প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে যোগসাজসে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ও খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অখিল চন্দ্র দাস নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তিনটি বিশাল মেহগনি ও চারটি রেন্ট্রি গাছ পানির দরে এক লক্ষ দশ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। বিক্রিত গাছের প্রকৃত আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। স্থানীয় অভিভাবক ও ৮নং ওয়ার্ড আ.লীগের সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর ফকির (৫৫) অভিযোগ করে বলেন, সখ করে অখিল দাসকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেছিলাম কিন্তু বিদ্যালয়ের উন্নয়নরে জন্য কোন কিছুই করেনি বরং যাওয়ার সময় আত্মসাতের উদ্দেশ্যে স্কুলের গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। আরেক অভিভাবক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য মো. আব্দুল ফকির অভিযোগ করে বলেন, সভাপতি অখিল চন্দ্র দাস ক্ষমতার জোরে কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ন অবৈধভাবে গাছ বিক্রি করেছে।
যা এলাবাসি হিসেবে মানতে পারি না। এ সম্পর্কে জানতে গাছ ক্রেতা ব্যবসায়ী সামু ফকিরকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. ফরিদ হোসেন বেপারী(৩৫) ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন (৩৮) অভিযোগ করেন, সভাপতি অখিল চন্দ্র দাস স্কুলের গাছ আত্মসাত করতেই অনিয়ম করে গাছ বিক্রি করেছে। গত ৬/৭দিন ধরে গাছ ব্যবসায়ী সামু ফকির গাছ কাটতে শুরু করলে খবর পেয়ে আমরা গাছ কাটতে বাধা দেই।
তা উপেক্ষা করে অখিল দাসের নির্দেশে তার লোকজন গাছ কাটা অব্যহত রাখেন। বৃহস্পতিবার এলাকাবাসি ও অভিভাবকরা বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান ও গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)র কাছে অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিন ও আ.লীগ নেতা অখিল দাস গাছ বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন। খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গৌরনদী উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি মো. নুর আলম সেরনিয়াবাত বলেন, অখিল দাসের বিরুদ্ধে গাছ বিক্রির অভিযোগের সত্যতা রয়েছে।
বিষয়টি ইউএনকে জানিয়েছি। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা নাসরিন বলেন,আজ শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে গাছ জব্দ করে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামাল হাওলাদার ও ৭নং ওয়ার্ড আ.লীগ সভাপতি মো. কালু হাওলাদারের জিম্মায় রেখেছি। পরবর্তিতে গাছ কাটার বিধিবিধান অনুসরন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply