শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি:বরগুনার তালতলী যুবলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান (মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত) মো. মনিরুজ্জামান মিন্টু নিজের পিস্তল নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকে ধাওয়া করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার জয়ালভাঙ্গা গ্রামের ৩৮০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯ জেলেদের টাকা আত্মসাৎকে কেন্দ্র করে বুধবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি উল কবির জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে ধাওয়া করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের জয়ালভাংগা গ্রামে নির্মাণাধীন ৩৮০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের ক্ষতিপূরণের টাকা ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের।
জেলেরা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক মো. তৌফিকুজ্জামান তনুর কাছে এ টাকার বিষয়ে অভিযোগ করেন।
বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জয়ালভাঙ্গা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিসে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে যান। ওই সময় নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. দুলাল ফরাজী ওই অফিসে উপস্থিত ছিলেন। টাকা আত্মসাতের বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সম্পাদকের কথা-কাটাকাটি হয়।
খবর পেয়ে তালতলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ঘটনাস্থলে যান এবং তিনি ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীর পক্ষ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে মনিরুজ্জামান মিন্টু ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ছোট ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে পিস্তল উঁচিয়ে জীবননাশের হুমকি দেয়।
এ সময় দুই ভাই ও তার সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মিন্টু পিস্তল উঁচিয়ে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার ও ছোট ভাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে ধাওয়া করেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দারকে নিয়ে ৩৮০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯ জন জেলের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ উত্তোলন করে জেলেদের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎকারী চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীর কাছ থেকে উদ্ধার করে জেলেদের মাঝে বিতরণ করতে গেলে আমার বড় ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান (বহিষ্কৃত) মনিরুজ্জামান মিন্টু ও নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে তিনি (মিন্টু) আমাকে ও সভাপতিকে পুলিশের উপস্থিতে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দেয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার বলেন, জেলেদের টাকা উদ্ধার করতে গেলে এতে বহিষ্কৃত উপজেলা চেয়ারম্যান ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী মনিরুজ্জামান মিন্টু আমাকে ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে পিস্তল দিয়ে গুলি করতে উদ্যত হয়। তিনি আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, মিন্টুর নামে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীসহ এক ডজন মামলা রয়েছে।
নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী টাকা আত্মসাতের কথা অস্বীকার করে বলেন, তারা ভাই ভাই বাগ্বিতণ্ডা করেছেন। এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তালতলী থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার এবং সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার সামনে পিস্তল তাক করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি।
মনিরুজ্জামান মিন্টু এ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে।
Leave a Reply