শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৪ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি:দুই লক্ষ ৫০ হাজার টাহা খরচ হইর্যা ১০ একর জায়গায় তরমুজ চাষ হরছেলাম। বৃষ্টির পানতে সব শ্যাষ অইয়্যা গ্যাছে। কি দিয়া মানষের ঋণ শোধ হরমু, হেই চিন্তায় ঘুম নাই। সরকারের কাছে দাবি হরি মোগো বাঁচান, কথাগুলি বলছিলেন আমতলী আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক মৃধা।অতিবর্ষণে বরগুনার আমতলীতে তরমুজসহ রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি জমে তরমুজ, মুগডাল, খেসারী ডাল, সূর্য্যমূখী, আলু ও চিনাবাদাম গাছ পঁচে গেছে। এতে উপজেলায় প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানান কৃষকরা।
আমতলী কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় এ বছর তরমুজ ৩ হাজার, মুগডাল ৭ হাজার ৫০০, খেসারী ডাল ৭ হাজার ৫০০, চিনাবাদাম ৪’শ ৬০ ও সূর্য্যমূখী ২’শ ৫০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও অতিবর্ষনের কারনে ওই জমির ফসল কৃষকরা ঘরে তুলতে পারেনি। ঘরে তোলার পূর্বেই খেসারী, মুগডাল নষ্ট হয়ে গেছে। তরমুজ ও চিনাবাদামের ক্ষেতে পানি জমে গাছ পঁচে গেছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারী সকালে আকষ্মিক ঝড়ের সাথে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। ওই বৈরি আবহাওয়া তিন দিন স্থায়ী ছিল। ওই সময় তরমুজসহ রবি ফসলের ক্ষতি হয়। কৃষকরা ওই ক্ষতি কিছ্টুা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করলেও সোমবার রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টিতে তরমুজ, মুগডাল, খেসারী ডাল, সূর্য্যমুখী ও চিনাবাদামের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে রবি শস্য রক্ষা করার কোন সম্ভাবনা রইল না। এতে কৃষকের ৩০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলে জানান কৃষকরা।
হলদিয়া ইউনিয়নের টেপুড়া গ্রামের কৃষক মোঃ আবু ছালেহ জানান, বৃষ্টির পানিতে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে সব পঁচে গেছে। এতে আমার পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
আঠারোগাছিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি মোঃ নাসির প্যাদা জানান, ৬ লক্ষ টাকা খরচ করে ২৭ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। বৃষ্টির পানি জমে ক্ষেতের সব তরমুজ গাছ পঁচে গেছে।
সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা জানান, ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে ৩ একর জমিতে মুগডাল, খেসারী ডাল, বাদাম, মরিচ ও মিষ্টি আলুর চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, ফসলতো শেষই এখন ওই জমি পরিষ্কার করতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হবে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলায় আঠারোগাছিয়া, সোনাখালী, চুনাখালী, কুকুয়া, গুলিশাখালী, নাচনাপাড়া, চাওড়া, কাউনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম বদরুল আলম বলেন, অতিবর্ষণে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষকের ঘুরে দাঁড়ানোর কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি আরপ বলেন, ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন তৈরি করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply