শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩১ অপরাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি:ভোলার চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে মুরগি চুরির অপবাদে কিশোর রুবেলকে (১৪) নির্যাতনের ঘটনায় এক সপ্তাহের মধ্যে একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে ঘটনা-সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সমন্বয়ে ওই অনুসন্ধান প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার জনপ্রিয় অললাইন নিউজ পোর্টল ভয়েস অব বরিশালে ভোলায় মুরগী চুরির অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল !’ শিরোনামে মুরগি চুরির অপবাদে কিশোর রুবেলকে নির্যাতনের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত ১৫ নভেম্বর নির্মম এই ঘটনা ঘটলেও নির্যাতনকারীদের হুমকি আর আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করতে পারেনি। নির্যাতনের নির্মম দৃশ্য ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় ঘটনার দুই মাস পর পুলিশ ভুক্তভোগীর মাকে ডেকে নেয়। এর পর নির্যাতনকারী হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আমজাদ হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করে গত শনিবার শশীভূষণ থানায় মামলা করেছে।’
রুবেলের মা বিলকিছ বেগমের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রুবেল জেলেদের নৌকায় বাবুর্চির কাজ করে। ঘটনার আগের দিন এলাকায় প্রীতিভোজের জন্য রুবেলসহ আরও কয়েকজন মুরগি কিনে আনে। তবে ওই মুরগি চুরি করে আনা বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার আমজাদ হোসেন। ১৫ নভেম্বর আমজাদ মেম্বার রুবেলকে বাড়ি থেকে হাজারীগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে গ্রামবাসীর সামনে তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করা হয়।
বিলকিছ বেগম অভিযোগ করেন, ‘তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম হাওলাদারের কাছে ছেলেকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন। তখন চেয়ারম্যান মেম্বারকে নির্দেশ দেন পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে রুবেলকে ছেড়ে দিতে। নিরুপায় হয়ে বিলকিছ বেগম নাকফুল ও গলার গহনা বন্ধক রেখে টাকা নিয়ে এসে ছেলেকে মুক্ত করেন। তবে অর্থাভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারেননি তিনি। মেম্বারের হুমকির কারণে মামলা করতেও সাহস পাননি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দুপুরে আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। এরপর আদালত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
Leave a Reply