বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ আগুন লাগার গুজবে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চুরির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার দুপুরে শিশু ওয়ার্ড থেকে এ গুজব ছড়ানো হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছে তারা।
হাসপাতালের স্টাফ আবুল কালাম বলেন, হঠাৎ হাসপাতালের মূল ভবনের দোতলার পূর্ব পাশে আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিছু লোক আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। ওই সময় দোতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত পূর্বপাশের বিভিন্ন ওয়ার্ডে থাকা রোগী ও স্বজনরা তাড়াহুড়ো করে নিচে নামতে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, যারা নিচে নামছিল তারা কেউই আগুন লাগার দৃশ্য দেখেনি এমনকি কোথায় লেগেছে তাও বলতে পারছে না। পরে হাসপাতালের স্টাফরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে দোতলার শিশু ওয়ার্ডে কিছু লোক আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করলে রোগীসহ সবাই দৌড়ে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে হাসপাতাল ভবনের বাইরে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে জড়ো হয়। সংগবদ্ধ চোরচক্র বড় ধরনের চুরির লক্ষ্যেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আবুল কালামের ধারণা।
শিশু ওয়ার্ডের স্টাফ জব্বার জানান, তাদের ওয়ার্ডে কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় একজন অধ্যাপকসহ চিকিৎসকরা ওয়ার্ডেই ছিলেন। দুইজন লোক আকস্মিক আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করলে সবাই বাইরে দৌড়ে চলে যান। ওই সময়ের মধ্যেই ওয়ার্ডের ভেতর থেকে দুটি মোবাইল চুরি হয়।
হাসিনা নামে একজন বলেন, ঘটনার আগে এক রোগীর স্বজন মোবাইলে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সকেটে চার্জার প্রবেশ করাতে গিয়ে স্পার্ক করে, তবে কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি। ওই সময় সেই নারী একটু ভয় পেয়ে আঁতকে উঠলে পাশে থাকা লোকজন আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে দেয়।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম বলেন, আগুন লাগার কথা শুনে কেউ আর তা যাচাই করেনি। রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌড়ে হাসপাতাল ভবনের বাইরে চলে আসে। হাসপাতালের স্টাফরা তাদের বারণ করলেও তারা শোনেনি। পরে অনেক বুঝিয়ে আগুন না লাগার নিশ্চয়তা দিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের ওয়ার্ডে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর বিভিন্ন জায়গা থেকে মোবাইল চুরির মৌখিক খবর আসতে শুরু করে।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ঘটনাটি এক ধরনের প্রতারণামূলক। আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে রোগীদের মালামাল চুরির চেষ্টা চালানো হয়েছে। মৌখিকভাবে কিছু মোবাইল খোয়া যাওয়ার কথা শুনছি, তবে কেউ লিখিত দেয়নি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে- পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পর্যালোচনা করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর কেউ ঘটাতে না পারে। সেই সঙ্গে আজকের ঘটনা পরিকল্পিত হয়ে থাকলে, আর তা তদন্তে বেরিয়ে এলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল সদর স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্বাস উদ্দিন বলেন, ফোনে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে রোগীসহ সাধারণ মানুষকে হাসপাতাল ভবনের নিচে দেখতে পায়। তবে কোথায় আগুন লেগেছে কেউই বলতে পারেনি। এরপর হাসপাতাল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে খোঁজ চালিয়েও আগুনের সূত্রপাত পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আমাদের কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।
Leave a Reply