মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন
মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মাঠ জুড়ে যেন সূর্যমুখীর হাসি ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষেতজুড়ে থাকা সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় করছে মানুষ। ফুলের সৌন্দর্যকে নিজের সাথে ক্যামেরাবন্দী করছে অনেকেই।
এবারে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলনও কিছুটা কম হওয়ার আশঙ্কা করেছে কৃষকরা। সূর্যমূখী চাষের ফলে একদিকে যেমন আয় হয় তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলার কর্মহীন লোকেরা ঘরে বসে না থেকে খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় তাদের পতিত জমিতে করেছে সূর্যমূখীর আবাদ। এবারে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। এই ধারণা থেকে চর ও আবাদি জমিতে কৃষিবিভাগ প্রণোদনার মাধ্যমে ব্যাপক জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে পাল্টে যেতে পারে এই এলাকার চেহারা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সূর্যমুখী থেকে পাখির খাবারের পাশাপাশি কোলেস্টেরলযুক্ত তেল উৎপাদন করে ক্ষতিকর পামওয়েল ও সয়াবিনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রেহাই পাবেন ভোক্তারা। এই ধারণা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষিবিভাগের প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে ব্যাপক জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে পাল্টে যেতে পারে এই এলাকার চিত্র।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার মির্জাগঞ্জ চরে, পূর্ব সুবিদখালী দত্তের চরে, পশ্চিম সুবিদখালী, কাকড়াবুনিয়া, মজিদবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী হাইব্রিড জাতের ফুলের চাষ করেছেন।
দোকলাখালী গ্রামের গ্রামের কৃষক কালা হারুন ও সুবোধ মিস্ত্রী বলেন, ২০ শতাংশ জমিতে আলাদা আলাদাভাবে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সহযোগিতায় সূর্যমূখী ফুলের চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে সূর্যমূখী চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ভালো ফলন হবে আশা করছি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারি করে বীজ রোপণ করেছি। তিন মাসের মধ্যে ফুল আসা শুরু হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে খরচ অল্প এবং পরিশ্রমও কম। তাই লাভও বেশি।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য সূর্যমুখীর তেলের বিকল্প নেই। আবহাওয়া, পানি, মাটি সূর্যমুখী চাষের অনুকূলে। ওই লক্ষে সূর্যমুখীই হতে পারে স্বাস্থ্য রক্ষার গুণসম্পন্ন তৈলবীজ। আমরা যেভাবেই তার তেল আহরণ করি না কেন, তা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত। ওই অর্থে সূর্যমুখীর তেল হতে পারে আমাদের জন্য আশীর্বাদ। যাতে কৃষকরা লাভবান হয় এবং ভবিষ্যতে সূর্যমূখী চাষে কৃষকরা উৎসাহী হতে পারে ওই লক্ষে উপজেলা কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, সূর্যমুখীর স্বাভাবিক ফলন বিঘা প্রতি ৬ থেকে ১০ মণ, তবে মির্জাগঞ্জ চরাঞ্চলে সূর্যমুখীর ফলন ১০ মণের বেশি আশা করছি। মির্জাগঞ্জে সূর্যমুখীর চাষ করা হলে এ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply