মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২১ পূর্বাহ্ন
তজুমদ্দিন প্রতিনিধি॥ ভোলার তজুমদ্দিনে প্রায় কোটি টাকার গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২২ মিটার সিটু ফাইল স্থাপনের নিয়ম থাকলেও রাতের আধারে উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশ উপেক্ষা করে ১২ থেকে ১৫ মিটার ফাইল নির্মাণ করেন ঠিকাদার।
এ বিষয়ে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ভোলা-৩ আসনের সাংসদ এবং প্রকল্প পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তর বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজে ১২টি সিটু ফাইল নির্মাণের কথা রয়েছে। চট্টগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনির আহমেদের নামে কার্যাদেশ হলেও গত ১৯ মার্চ নির্মাণ কাজ শুরু করেন ভোলার শান্ত এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মোরশেদ আলম চাঁন নামের এক ঠিকাদার। ২৭ মার্চ পর্যন্ত ৭টি সিটু ফাইল স্থাপনের কাজ করে। এরপর দেশে করোনা দূর্যোগের কারণে ২৮ মার্চ উপজেলা প্রকৌশলী কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কিছু দিন কাজ বন্ধ রেখে রাতের আধারে গত ৬ ও ৭ এপ্রিল ৫টি সিটু ফাইলের কাজ সম্পন্ন করেন।
অভিযোগ রয়েছে, তদারকী কর্মকর্তার অনুপস্থিতির সুযোগে সিটু ফাইল নির্মাণে ২২ মিটার করে লেন্থ দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ১০-১২ মিটার লেন্থ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে পূর্বে নির্মিত ৭টি সিটু ফাইলেও যথাযথ দৈর্ঘ্য অনুসরণ করা হয়নি। এছাড়াও ব্রিজের নির্মাণ কাজে ৬০ গ্রেড রড, এলসি পাথর, লালবালি ও ১নং ইট বা খোয়া ব্যবহারের কথা থাকলেও তা ব্যবহার করা হয়নি নির্মাণ কাজে। সরজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বাংলা পাথর, লোকাল রড ও সাদা বালি সাইডে পড়ে আছে। পরে ব্রীজে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে ২২ এপ্রিল কাজও বন্ধ করে দেয় স্থানীয়রা। ওয়ার্ক এ্যাসিস্ট্যান্ট মোঃ হোসেন জানান, ৮টি সিটু ফাইল স্থাপনের সময় পর্যন্ত তিনি সাইডে কাজ তদারকি করেছেন। পরে কাজ বন্ধের নির্দেশনা পেয়ে তিনি আর সাইডে যাননি। তবে সিটু ফাইলের লেন্থ ২০মিটার করা হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। অপরদিকে এ বিষয়ে কাজের তদারকি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, নির্মাণ কাজে কোন অনিয়ম হয়নি। ১২টি সিটু ফাইল নির্মাণের সময় তিনি সাইডে উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু খোজ নিয়ে জানা গেছে, সিটু ফাইল নির্মাণকালী সময়ে তদারকি কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামকে সাইডে দেখা যায়নি। ওয়ার্ক এ্যাসিস্ট্যান্ট মোঃ হোসেনের মাধ্যমে ৭টি সিটু ফাইলের কাজ বাস্তবায়ণ হয়। কাজ বন্ধের নির্দেশনা থাকা সত্তেও ঠিকাদার তদারকি কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে বাকি ৫টি সিটু ফাইলের কাজ সরকারি নির্দেশনা না মেনে ব্যাপক অনিয়ম করেই সম্পন্ন করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিরাজ উদ্দিন সিরাজ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ভোলা-৩ আসনের সাংসদ এবং প্রকল্প পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় সাংসদ নুরুন্নবী চৌধূরী শাওন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
Leave a Reply