শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ কোনো গোপন সমঝোতা বা বিদেশি রাষ্ট্রের সম্মতি নয়—শুধুমাত্র জনগণের ম্যান্ডেটকে ভিত্তি করেই ক্ষমতায় যেতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২–এ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এক ব্রিফিংয়ে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথা বলেন।
তিনি জানান, তার বক্তব্যের প্রেক্ষাপট ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিবরণ তুলে ধরা। তিনি দাবি করেন, আন্দোলনকারীদের বক্তব্য নিয়মিতভাবে বিকৃত করেছে নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম, আর রাষ্ট্রীয় বাহিনী আন্দোলন স্থগিতের ‘নাটক’ তৈরি করেছে।
হাসনাত বলেন, ১৪ জুলাই আন্দোলনকারীদের অপমানজনক মন্তব্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ জুলাই ঢাবিতে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। পরদিন ১৬ জুলাই সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে রংপুরে আবু সাঈদ এবং চট্টগ্রামে ছাত্রদলের ওয়াসিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি জানান, সেদিন ছয়জন শিক্ষার্থী নিহত হয়।
তিনি বলেন, ১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজা দিতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে এজেন্সি ও প্রশাসন। জানাজার সময় পুলিশ, বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিতভাবে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে রাষ্ট্রীয় ‘সেফ হাউজে’ নিয়ে সারারাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।
হাসনাত অভিযোগ করেন, সেদিন এজেন্সি সদস্যদের নির্দেশে একাত্তর টিভি, সময় টিভি, ডিবিসি নিউজকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল তা তারা নিজ চোখে দেখেছেন। ১৮ জুলাই প্রেস কনফারেন্সে তারা স্পষ্টভাবে বলেন, “শহীদদের রক্তের ওপর সংলাপ নয়, শাটডাউন চলবে”—কিন্তু গণমাধ্যম তা প্রচার করেনি।
তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার প্রশাসনিক কাঠামো সামরিক বাহিনী, বিচার বিভাগ ও মিডিয়াকে আমলাতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। সেই কাঠামোর কিছু বিপজ্জনক সদস্যের বিচার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জনগণের ভোটই আমাদের একমাত্র পথ; কেউ আমাদের ক্ষমতায় বসাবে না।”
Leave a Reply