রবিবার, ০২ জুন ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি॥জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুরের রহমানের বাঁধাই করা ছবি পড়ে আছে মেঝেতে। ছবির ফ্রেম ভেঙে ফেলা হয়েছে। ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে জাতির পিতার ছবি। বঙ্গবন্ধুর ছেড়া ছবির পাশেই পড়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। সেটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। হামলাকারীদের হাত থেকে বাদ যায়নি দলীয় কার্যালয়ে আসবাবপত্রও।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যার দিকে হামলার পরের চিত্র এটি। কলসকাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে। তবে হামলার কথা অস্বীকার করে বিএনপি বলেছে, তাদের নেতাকর্মীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
প্রত্যক্ষদশীরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। উভয়পক্ষ লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় লিপ্ত হয়। ফলে আতংকে বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে ফেলে। স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প থেকে সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির কতিপয় কর্মীরা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে থাকা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। তারা দলীয় কার্যালয়ে থাকা জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি নামিয়ে তা ভাঙচুর করে। একই সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এই ঘটনার রেশ ধরে পরবর্তীতে একটি দোকানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। যেটি বিএনপি প্রার্থী তার নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল।
দলীয় কার্যালয়ে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস ছালাম
তালুকদার ছিলেন। তিনি বলেন, বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন ও দলীয় স্লোগান দিয়ে কতিপয় ছেলে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে তারা দলীয় কার্যালয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে চলে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া কলসকাঠী দলীয় কার্যালয়ে ছুটে আসেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর তালুকদার বলেন, নৌকার সমর্থকরা তাদের পরাজয় নিশ্চিত ভেবে ভোটের পরিবেশ বিনষ্ট করতে চাইছে। তারই অংশ হিসেবে বিএনপি প্রার্থীর বাজারের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় প্রার্থীর বড় ছেলে কামাল হোসেন হাওলাদার, কর্মী আরিফ হোসেন ও সোহাগ আহত হয়েছে। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের দলীয় কার্যালয় ভেঙে বিএনপির ওপর দায় চাপাতে চাইছে বলে তিনি দাবি করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া বলেন, বিএনপি প্রার্থী নিজের পরাজয় নিশ্চিত হয়েই ভোটের পরিবেশ নষ্ট করছে। তারই অংশ হিসেবে জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেব।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ছুটে গেছেন। কলসকাঠীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Leave a Reply