বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। ১৫দিনের নবজাতক থাকাকালে বাবাকে হারানো ইদ্রিস বিশ্বাসের বয়স আজ ২৯ বছর,তরতাজা যুবক। স্ত্রী-সন্তান আর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে পাঁচ জনের সংসার চলছে একটি ফুচকার দোকান চালিয়ে। কষ্টের জীবনকে আরও কষ্ট দিয়েছে বাবাকে খুজে না পাওয়া। সবকিছুর মধ্যে বাবাকে খুঁজতেন। ১২ বছর আগে বাবার খোঁজ পেয়েও স্বীকৃতি মেলাতে পারেননি। ঘুরেছেন। ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দিয়েছেন। চাচাদের কাছে নালিশ করেছেন। বাবা ইসলামি ব্যাংকের অফিসার হওয়ায় সেখানেও অভিযোগ দেন। কিন্তু বাবার মন গলেনি।
এক পর্যায়ে এবছরের জুলাই মাসে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। সেখানে সালিশ বসে মেলে বাবার স্বীকৃতি। বাবা সাইফুল ইসলাম বিশ^াস মেনে নেন। বাবা সাইফুল ইসলামকে পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ ছুয়ে ফেললেন।
কিন্তু মনের মধ্যে রয়ে যায় অজানা কষ্ট। বাবার বাড়িতে যাওয়া হলো না। বাবা নোটারির মাধ্যমে পিতার স্বীকৃতি দিয়েছেন। কিন্তু তার উত্তরাধিকার হিসেবে কিছুই পাবেন না। এমনটা ওই নোটারিতে উল্লেখ রয়েছে। তারপরও পিতার স্বীকৃতি পেয়ে নিজেকে এ জগতের সবচেয়ে বেশি নিজেকে সুখী মনে করছেন ইদ্রিস। হেন কোন জায়গা নেই যেখানে বাবাকে না খুজেছেন।
পটুয়াখালীর শহীদ আলাউদ্দিন শিশু পার্কের পাশেই একটি চায়ের দোকান ইদ্রিসের। জানালেন, মাত্র ১৫দিনের নবজাতক থাকাকালে তার মায়ের তালাক হয়ে যায় বাবার সঙ্গে। কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম ধুলাসার গ্রামে বাবার বাড়ি। ভাগ্যক্রমে সাইফুলও বিয়ে করেন মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামে। এরপর মানুষের মাধ্যমে বাবার খোঁজ মেলে। কিন্তু মেনে নেয়নি বাবা।
দেয়নি স্বীকৃতি। বহু দেনদরবার শেষে ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বাবুল উভয়পক্ষকে নোটিশ করে নিজের অফিসে বসে স্বাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে বাবা-ছেলের হারানো সম্পর্ক জোড়া করে দেন। একটি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বাবা সাইফুল ইসলাম বিশ্বাস ছেলে ইদ্রিস বিশ্বাসকে মেনে নেন। কিন্তু অদ্ভুত এক কন্ডিশন জুড়ে দেয়া হয় ওই নোটারিতে।
বাবার কোন সম্পত্তি যদি স্বেচ্ছায় না দেয়া হয় তাইলে পাবে না ইদ্রিস। তারপরও অভাগা ইদ্রিস খুশি। তার মন তৃপ্ত এই যে পিতৃপরিচয় জুটেছে। পিতৃপরিচয় পেলেও সম্পদের ওয়ারিশ দাবি করার সুযোগ রইলনা। ইদ্রিসের বাবা ফের বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন। ওই সংসারে রয়েছে স্ত্রী-সন্তান। ইদ্রিসের বাবা সাইফুল ইসলাম বিশ্বাস বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। সাইফুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Leave a Reply