বসত-ভিটা বিক্রি করে ৬৬ ভাস্কর্য বানালেন পটুয়াখালীর রাজমিস্ত্রি সাহেব আলী Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
ডোনাল্ড ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট! ভবিষ্যদ্বাণী বাংলাদেশী জ্যোতিষীর সংবিধান সংস্কার সম্পর্কে যে পরামর্শ দিলেন ড. কামাল হোসেন কলাপাড়ায় গভীর রাতে অগ্নিকান্ড, দুটি দোকান পুড়ে ছাই গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরের কমিটি গঠন, থাকছেন যারা নিষেধাজ্ঞার ২০ দিনে বরিশালে ১৭৩৬১ কেজি ইলিশ জব্দ রাজনীতির অস্থিরতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি যুব দিবসে ঝালকাঠিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ করলো ইয়াস হলফনামায় জমির দাবি থেকে পিছু হটলেন সাবেক ত্রান প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী সাইবার আক্রমণে ব্যাংকে উদ্বেগ বাড়ছে: সুরক্ষা পদক্ষেপ বাংলাদেশ ব্যাংকের আগামী দুই বছরে ৫ লাখ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ




বসত-ভিটা বিক্রি করে ৬৬ ভাস্কর্য বানালেন পটুয়াখালীর রাজমিস্ত্রি সাহেব আলী

বসত-ভিটা বিক্রি করে ৬৬ ভাস্কর্য বানালেন পটুয়াখালীর রাজমিস্ত্রি সাহেব আলী

বসত-ভিটা বিক্রি করে ৬৬ ভাস্কর্য বানালেন পটুয়াখালীর রাজমিস্ত্রি সাহেব আলী




পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥ সাহেব আলী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। মুক্তযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য বানাতে গিয়ে প্রথম স্ত্রীর সংসার ভেঙে গেলেও ছাড়েননি ভাস্কর্য বানানোর কাজ। নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত করতে তিনি ৬৬টি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য বানিয়েছেন।

 

কোনো অনুদান নয়, নিজের বসত-ভিটা বিক্রি করে নিরক্ষর এই মানুষটি মহৎকর্ম সম্পাদন করেছেন। বাকি ৫টি ভাস্কর্য নির্মাণাধীন, প্রয়োজন অর্থ। সাহেব আলীর এ হস্তশিল্প দেখতে অগণিত মানুষের ভিড় জমে তার গ্রামের বাড়িতে।

 

 

পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অজপাড়া গায়ের আব্দুল আজিজের ছেলে সাহেব আলী। দ্বিতীয় স্ত্রী পিয়ারা ও ছেলে হাসান, হোসেন, মেয়ে নিলীমা ও নিলুফাকে নিয়ে সাতান্ন বছরে পা দিয়েছেন তিনি।

 

 

এক ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী। ১৯৯৬ সালে মুন্সিগঞ্জের একটি চালের মিলে কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী বীরাঙ্গনা রাহিমার কাছে একাত্তরের সমাজ-সভ্যতা বিবর্জিত কাহিনি শুনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য বানাতে উদ্বুদ্ধ হন তিনি।

 

 

পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে এক নীরব সংগ্রামের প্রয়াস করেন। কিন্তু তার এই ভিন্ন শিল্পায়নের রূপ দিতে বসত-ভিটা বিক্রি ছাড়াও প্রথম স্ত্রী হনুফা তাকে ছেড়ে যায়। তবুও তিনি ভাস্কর্য নির্মাণ ত্যাগ করেননি।

 

 

কখনো অর্ধাহারে কখনো অনাহারে দিন পার করে ভাস্কর্য বানানোর কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। জীবিকা নির্বাহের কাজ ফেলে ভাস্কর্য নির্মাণ করতে গিয়ে সাহেব আলীর পরিবার নিয়ে কষ্টে কাটাতে হয়েছে। বর্তমানে পুরোনো টিন দিয়ে শেড বানিয়ে পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছেন।

 

 

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চরম শঙ্কায় থাকেন তারা। সরকারি অথবা কোনো দাতা সংস্থা শিল্পকর্মকে সহায়তা দিলে নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার অজানা ইতিহাস, ঐতিহ্য ভালোভাবে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে বলে দাবি তার।

 

 

সাহেব আলী আরো জানান, প্রথমে ভাস্কর্য বানানোর কাজ শুরু করলে সংসারের আয়-রোজগার বন্ধ হয়। প্রথম স্ত্রী হনুফা পাগল বলে তাকে ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যায়।

 

 

সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির অভিমুখে কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের বিখ্যাত ব্যক্তি, স্বাধীনতার চিত্রপট এবং একাত্তরের অবিস্মরণীর তাৎপর্য নিয়ে ২০টি প্ল্যাকার্ড। এছাড়া প্রদর্শন করা হয়েছে নাগরিক সচেতনতামূলক কিছু বাক্য।

 

 

পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৩০ শতক জমির ১৭ শতক জমি ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দীর্ঘ এক বছর ধরে ৬৬টি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য নির্মাণ করতে গিয়ে এনজিও থেকেও ঋণ নিতে হয়েছে। পুরোনো টিনশেডে তৈরি দোচালা টিনের ঘরটুকু ছাড়া বাকি জায়গায় প্রদর্শন করা হয়েছে- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বজ্রমুষ্ঠি, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ আঙ্গুলে প্রদর্শন করা হয়েছে গোটা বাংলাদেশ, বীর যোদ্ধার পদদলিত (পাক বাহিনী) কাল নাগ, ১৫ আগস্টের ভয়াবহ বুলেট, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর, ৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, ৫২-এর ভাষা আন্দলোনসহ মোট ৬৬টি ভাস্কর্য।

 

 

নিরক্ষর এই মানুষের হাতের নিপুন ছোঁয়ায় যেন ফুটে উঠেছে গোটা বাঙালি জাতির কৃতিত্ব এবং স্বাধীনতার সেই রক্তস্নাত স্মৃতি। বালু আর সিমেন্ট মিশ্রণে তাক লাগিয়ে দিয়েছে গোটা এলাকায়। শুধু গ্রাম নয়, শহর থেকে অনেকেই দেখতে যান সাহেব আলীর নিজ হাতে গড়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এ ভাস্কর্যগুলো।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD