বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন
এইচ, এম হেলাল॥ রমজানের রোজার শেষে আসছে খুশির ঈদ। কিন্তু সবুজ হাওলাদার , কবির উদ্দিন, মিলনদের ঈদের খুশি কেড়ে নিয়েছে লকডাউন। সবুজ পেশায় একজন দর্জি। লকডাউনের জন্য তাঁদের দোকানে তালা ঝুলছে। এখন কী করে ছেলেমেয়েদের মুখে ঈদে হাসি ফোটাবেন, কী করে সারা বছর ভাত-কাপড়ের জোগাড় করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।
দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। শুধু সবুজদেরই নয়, বরিশাল নগরীর অধিকাংশ দর্জিদেরই একই অবস্থা। দর্জি দোকানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরাও পড়েছেন চরম সমস্যায়। দর্জিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সারা বছর টুকটাক কাজ চললেও পুজো এবং ইদে তাঁদের দম ফেলার সময় থাকে না। মাস দু’য়েক আগে থেকেই অর্ডার নেওয়ার পাশাপাশি চলে সেলাইয়ের কাজও।
ওই দুই মৌসুমে সেলাইয়ের কাজ করেই পুজো বা ঈদের খরচ-সহ সারা বছরের ভাত কাপড়ের সংস্থান করে নেন দর্জিরা। কিন্তু এ বারে সেই সম্ভাবনায় বাদ সেধেছে লকডাউন। অর্ডার নেওয়ার সময় থেকেই তালা ঝুলছে দোকানে। হাতে আর সময় আছে বারো দিনের মত।
আইনি ছাড়পত্র নিয়ে দোকান খুলতে কতদিন লাগবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তারপর কবেই বা অর্ডার পাবেন, কবেই বা সেলাই করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা। ৬ বছর ধরে দর্জির কাজ করছেন নগরীর কাজিপাড়া এলাকার সবুজ । তাঁর দোকানে ৩জন কর্মী কাজ করেন।
গত বছর ঈদে জামা প্যান্ট সেলাই করে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়েছিল। তিনি ভয়েস অব বরিশালকে বলেন,ঈদের ১০ দিন আগেই ৯ হাজার টাকার জামা প্যান্ট সেলাই হয়ে যায়। এ বারে কোনও অর্ডারই মেলেনি।
এখন দোকান খুললেও আর ঈদের বাজার ধরতে পারব না। অন্যবার মাস দু’য়েক আগে থেকে অর্ডার নিয়েও সেলাই করতে হিমশিম খেয়ে যাই। এ বার কাপড়ের দোকান বন্ধ থাকায় অনেকে ছিটই কিনতে পারেননি। অর্ডার পেলেও খুব একটা লাভ হবে না।
কাশিপুর ইছাকাঠী শাহাপরান সড়কের কবির ভয়েস অব বরিশালকে বলেন, ঈদ আর পুজোর কাজ করেই আমাদের সারা বছরের ভাত কাপড়ের সংস্থান হয়। ঈদে স্ত্রী ছলেমেয়েদের মুখে হাসি ফোটে। এবারে আর সেই আশা নেই । শুধু দর্জিরাই নন, দর্জি দোকানের কর্মীরাও বিপাকে।
নথুল্লাবাদ এলাকার জুয়েল ভয়েস অব বরিশালকে বলেন, ‘‘দর্জি দোকানে কাজ করেই আমাদের সংসার চলে। অন্যবার মালিকের কাছে কিছু করে অগ্রিম টাকা নিয়ে ঈদের বাজার করা হয় । এ বার দোকান বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ নেই। ত্রাণের চাল-ডালে দিন কাটছে। কী করে ছেলেমেয়েদের জামাপ্যান্ট কিনে দেব ভেবে পাচ্ছি না।’’
Leave a Reply