শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন সংস্কার না করা এবং মাঝপথে সংস্কার কাজ বন্ধ হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে বরিশাল নগরীর ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ওয়ার্ডের অধ্যক্ষ ইউনুস খান (খালপাড়) সড়কে যানবাহন চলাচলের কারণে অতিরিক্ত ধুলাবালি উড়ছে। এতে রাস্তায় চলাচলরত শিক্ষার্থী, যাত্রী ও পথচারীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। মুখে মাক্স, রুমাল ব্যবহার করেও সস্তি পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। কাউনিয়া মরকখোলা পোল থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত সড়কটি যেনো ধুলোর রাজ্য। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সংস্কার হোক জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি। আর নগর কর্তৃপক্ষ বলছে খুব শীঘ্রই নগরীর গুরুত্¦পূর্ণ সড়কগুলো সংস্কার ও মেরামতের কাজ শুরু হবে।
সূত্রমতে, ১৯৮২ সালে তৎকালীন সরকার এ অঞ্চলের মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে নগরীর মরকখোলা পোল থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত খালপাড় সড়কটি চালু করে। দীর্ঘদিন সড়কটি কাঁচা থাকার পর তৎকালীন পৌর কর্তৃপক্ষ ইট বিছিয়ে দেন। পরবর্তীতে ২০০২ সালে বরিশাল পৌরসভাটি সিটি কর্পোরেশনের রূপান্তরিত হয়। কিন্তু এ সড়কটির কোন উন্নয়ন হয়নি। পরবর্তীতে প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ২০১০ সালে সড়কটি পিচ ঢালাই করেন। এরপর থেকেই এ সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পায়। তবে পরবর্তী কোন মেয়র এ সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভাড়ি যানবাহন চলাচল করার কারণে আস্তে আস্তে সড়কটি বিভিন্ন স্থানে দেবে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এভাবে প্রায় একযুগ কেটে গেলে ২০২৩ সালের সিটি নির্বাচনের মাত্র কিছুদিন পূর্বে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সড়কটি পুনরায় মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং সংস্কার কাজও শুরু হয়। তবে হঠাৎ করেই অজানা কারণে বন্ধ হয়ে যায় সংস্কার কাজ। প্রায় এক বছর যাবত এ অবস্থায় থাকায় বর্তমানে দিন-রাত ধুলো উড়ছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচারী ও ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার অধ্যক্ষ ইউনুস খান সড়কে গিয়ে দেখা যায়, ব্যস্ততম সড়কটিতে ব্যাটারী চালিত অটো, সিএনজি, ইটবালুবাহী ট্রাক, মিনি ট্রাক, মাহিন্দ্রাসহ ভারি যানবাহন চলাচল করছে। আর এতে পুরো সড়কে কুয়াশার মতো ধুলা উড়ছে। মনে হয় যেন কুয়াশাছন্ন শীতের সকাল। অতিরিক্ত ধুলোর কারণে এ সড়কটিতে চলাচলকারী অটো, রিকশা, সিএনজি মোটরসাইকেল যাত্রীসহ পথচারীরা দুর্ভোগ শিকারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।
সিএনজি চালক মনির বলেন, ধুলোবালির কারণে রাস্তায় সামনের গাড়িগুলোও সহজে দেখা যায়না, এতে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা বেশি থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ইয়ামিন বলেন, সড়কে অতিরিক্ত ধুলোর কারণে তাদের দোকানের পণ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া তাদের শ^াসকস্টও হচ্ছে। পথচারি সুমন বলেন, মাঝপথে সংস্কার কাজ বন্ধ হওয়ার কারনেই এ অবস্থা হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা কস্টসাধ্য। সকাল-বিকেল যদি গাড়ি দিয়ে পানি দিতো তাহলে এমন হতো না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়ক লাগোয়া হওয়ায় তাদের বাসা-বাড়িতে বেশিরভাগ সময় দরজা-জানালা বন্ধ করে থাকতে হয়। এতে করে তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। ব্যবসায়ী মাসুদ বলেন, পন্যসামগ্রী, খাবার ঢেকে রেখেও ধুলোবালি থেকে রেহায় পাচ্ছেন না তারা। এতে খাবার ও বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন , ধুলোবালিতে বিভিন্ন রোগের জীবাণু থাকে। কমবয়সী ও বেশি বয়সী লোকজনের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সব সময় ধুলোবালি বেষ্টিত পরিবেশে থাকলে ফুসফুসে রক্তপ্রবাহ দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া সর্দি, কাশি, অ্যালার্জি, টনসিল প্রদাহ, গলাব্যথা, অ্যাজমা বিভিন্ন রোগ হতে পারে।
এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল বাশার জানান, বর্তমান মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডেই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো সংস্কার ও নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যেই টেন্ডার ঘোষণা করা হবে। আশা করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অধ্যক্ষ ইউনুস খান সড়কটি মেরামত করা হবে।
Leave a Reply