শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বরিশালজুড়ে চলছে প্রশাসনিক তৎপরতা। পথে পথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট আর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এসময় সামাজিক দূরত্ব না রাখা ও জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার অপরাধে ১২ টি দোকানকে ৭২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে নগরীর চকবাজার রোড, কাঠপট্টি রোড, বগুড়া রোড, নতুন বাজার ও হাটখোলা রোড পেয়াজপট্টি, আমতলার মোড়, সাগরদী, রুপাতলী, শের-ই-বাংলা মেডিকেলে, চাঁদমারী রোড, দিনারের পুল, দুর্গাপুর হাট, বিশ্বাসের হাট, চরমোনাই মাদ্রাসা গেইট এবং বুখাইনগর বাজার এলাকায় জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন চায়ের দোকান, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাস্ক পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনায় করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন। এসময় নগরীর হাটখোলা রোড পেয়াজ ও আদা পট্টিতে পেঁয়াজের মূল্য তালিকার সাথে বেচাকেনা রসিদে গরমিল থাকায় এবং স্বাভাবিক বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করায় মেসার্স সোনিয়া স্টোর্সকে ৫ হাজর টাকা, মেসার্স কৃষি বাণিজ্যালয়কে ১৫ হাজার টাকা এবং আনোয়ার হোসেন ভুঁইয়া আড়ৎকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া, কাঠপট্টি রোডে ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করায় খাজা ইলেকট্রিক নামক প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার টাকা এবং এলাহী ক্লথ স্টোরকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে আইনানুগ সহযোগিতা প্রদান করেন র্যাব-৮ এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। অভিযান চলাকালে নগরীর চাঁদমারি এলাকার ১ টি চায়ের দোকান, দুর্গাপুর হাট এলাকায় ১টি সিমেন্টের দোকান, চরমোনাই মাদ্রাসা গেইট এলাকায় ২ টি জুতার ও ১টি কাপড়ের দোকান, বুখাইনগর বাজার এলাকায় ২ টি রেফ্রিজারেটরের দোকান খোলা রেখে জনসমাগম ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ক্ষেত্রবিশেষে প্রায় ৬-৮ জন করে আড্ডারত অবস্থার পাওয়া যায়। এভাবে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে লোকসমাগম করে সরকারী আদেশ অমান্য করায় এবং করোনা ভাইরাস বিস্তারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করায় ১৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এসময় বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘুরাঘুরি না করার জন্য ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য প্রতিটি মোড়ে মোড়ে এবং এলাকার গলিতে গলিতে মাইকিং করা হয়। যারা আইন অমান্য করে বাইরে ঘুরাঘুরি ও আড্ডায় মগ্ন থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। অভিযানে প্রসিকিউসন অফিসার হিসাবে সহযোগিতা করেন উপজেলা স্যানিটারি অফিসার ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক জনাব মোঃ জাকির হোসেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহযোগিতা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।
অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply