বরগুনায় বেতাগীতে ধানের শীষের প্রার্থীকে বিএনপির বয়কট Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




বরগুনায় বেতাগীতে ধানের শীষের প্রার্থীকে বিএনপির বয়কট

বরগুনায় বেতাগীতে ধানের শীষের প্রার্থীকে বিএনপির বয়কট

বরগুনায় বেতাগীতে ধানের শীষের প্রার্থীকে বিএনপির বয়কট




বেতাগী প্রতিবেদক॥ ২৮ ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে বরগুনার বেতাগী পৌরসভায় চলছে জমজমাট প্রচার। তবে মেয়র পদে যতটা না, কাউন্সিলরদের কারণেই বেশি সরগরম এলাকা। সেখানে মেয়রে পদে তিন জন প্রার্থী।

 

একজন আওয়ামী লীগের, একজন দলের বিদ্রোহী, আর একজন বিএনপির। এর মধ্যে কেবল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চোখে পড়ে।আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে লড়ছেন এ বি এম গোলাম কবির, বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে আছেন হুমায়ূন কবির।

 

আর উপজেলা যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হাসান মহসিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জগ প্রতীক নিয়ে।শীতের সকালে চাদর মুড়ি দিয়ে ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের কাপে একটু উষ্মতার পরশ।

 

ভোটের মাঠে বিএনপির প্রার্থীর অনুপস্থিতি নিয়ে ভোটার আনোয়ারুল কবির বলেন, ‘এবার আর কী ইলিকশন অইবে? বিএনপি তো মাঠেই নাই, বিদ্রোহী প্রার্থী মার্কা লইয়া ঘরে বইয়া রইছে, নৌকা ছাড়া মাঠেই তো নাই কেউ, কার লগে কার ইলিকশন অইবে বুজি না।’গত চারটি নির্বাচনেই ভোট দিয়েছে কবির।

 

তিনি বলেন, বিএনপি প্রার্থী এখানে এক প্রকার কোণঠাসা। খোদ বিএনপিতেও তিনি একাংশের প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন।নৌকা প্রতীক পাওয়া বর্তমান মেয়র এ বি এম গোলাম কবীর নেতা-কর্মীদের নিয়ে গোটা শহর চষে বেড়াচ্ছেন।

 

তিনি বলেন, ‘শহরে যত প্রকার উন্নয়ন দেখেছেন, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, ম্যুরাল-ভাস্কর্য, ড্রেন, ভবন, মার্কেট যা কিছু দেখেছেন সবকিছুই আমার হাত ধরে এসেছে। আমি গত নির্বাচনী ইশতেহারের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছি।

 

এটি তৃতীয় শ্রেণির একটি পৌরসভা ছিল, আমি আমার মেধা শ্রমে দক্ষতায় প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেছি।’পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর মল্লিক প্রতীক দেয়ার পর তাকে বয়কট করেছেন দলের সিংহভাগ নেতা-কর্মী।

 

তিনি গত নির্বাচনেও লড়াই করেছিলেন। হেরে যাওয়ার পর পাঁচ বছর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি বলে অভিযোগ আছে।উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘উনি হইলেন নব্য বিএনপি। গত নির্বাচনে হঠাৎ করে উনি মনোনয়ন নিয়ে আসছেন। আমরা তাকে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে সামান্য ব্যবধানে হেরেছিলাম।

 

নির্বাচনের পর তিনি এলাকা ছেড়ে যে ঢাকায় গেছেন, আর এলাকার কোনো খোঁজ রাখেননি। তিনি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন কিনে নিয়ে এসেছেন। আমরা যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল শ্রমিকদল সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ মূল বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বয়কট করেছি।

 

পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আল-আমিন মল্লিক বলেন, ‘মনোনয়ন নিয়ে আসলেই ভোট পাওয়া যায় না। আমরা এমন প্রার্থীর পক্ষে কিছুতেই কাজ করবো না।বিএনপির প্রার্থী সম্পর্কে ভোটারদের কয়েকজন  বললেন, হুমায়ূন কবির বছরের বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। তৃণমূলের সঙ্গে তার খুব একটা যোগাযোগ নেই। গত নির্বাচনের পর তিনি ঢাকায় চলে যান।

 

পাঁচ বছর পর আবার নির্বাচন করার জন্য আসছেন।হুমায়ুন কবীর মল্লিক সেই অর্থে প্রচারে একনিষ্ঠও নন। কিছু পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ছাড়া তার পক্ষে কোনো কার্যক্রমই নেই।অবশ্য দলীয় নেতা-কর্মী পাশে না থাকার বিষয়টি এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘প্রচার প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। আমাকে এক প্রকার অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নানা হুমকি ও মারধর করা হচ্ছে। তাই আমরা মাঠে কাজ করতে পারছি না।

 

’দলের নেতা-কর্মীদের বিরোধিতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে ধানের শীষের প্রার্থী তিনি বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরোধিতা করছে। তারা আমার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় এলোমেলো কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছে।আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী যুবলীগ নেতা মাহামুদুল হাসান মহসিনের অবস্থানও নড়বড়ে। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ১৮ ডিসেম্বর তাকে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ৩ ডিসেম্বর তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটানিং কর্মকর্তা।

 

পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করে ১৫ ডিসেম্বর প্রার্থিতা ফিরে পান।জগ প্রতীক পেলেও তার আনুষ্ঠানিক প্রচার এখনও চোখে পড়েনি। শহরে ব্যানার পোস্টারও নেই তার।মাহামুদুল হাসান মহসিন বলেন, বেতাগীর যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে তার বেশিরভাগই হয়েছে সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের নেতৃত্বে। বর্তমান মেয়র এবিএম গোলাম কবির পৌরসভায় গত পাঁচ বছরে তার প্রতিশ্রুতির দশ ভাগ কাজও করতে পারেন নি।

 

নির্বাচনে জনগনের রায়ের ব্যপারে আমি শতভাগ আশাবাদি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক ভোটার বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ বি এম গোলাম কবির নির্বাচনী মাঠে ভালো অবস্থানে থাকায় ভোটাররা অন্য প্রার্থীদের দিকে ঝুঁকছেন না।

 

বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ গরম করতে না পারায় ভোটারদের কাছে নির্বাচনে মেয়র পদের ফলাফল কিছুটা অনুমেয়। তাই ভোটাররা মেয়র প্রার্থীর চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী বিশ্লেষণে বেশি আগ্রহী।কাউন্সিলর প্রার্থীরা অবশ্য কেউ বসে নেই। ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুর রহিম। ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত অব্দি প্রচারণায় বিরামহীন তিনি।

 

রহিম বলেন, ‘কোনো রকম বাধা বিপত্তি নেই। যে যার মতো করে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছি আমরা।নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বেতাগী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালোই।

 

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীলিপ কুমার হাওলাদার বলেন, ‘প্রথমবারের মত পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার ব্যপারে আমরা বদ্ধপরিকর।’১৯৯৯ সালে বেতাগী পৌরসভা গঠিত হয়। ৭.৭২ বর্গ কিলোমিটারের পৌর শহরটি পাঁচ বছর আগেও ‘সি’ গ্রেডের পৌরসভা ছিল। বর্তমানে ‘এ’ গ্রেডে উন্নীত হয়েছে। পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা নয় হাজার ৪৯৪ জন।

 

পৌরসভার গঠন করার পর এ পর্যন্ত চারটি নির্বাচন হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ একাধিকবার নির্বাচিত হতে পারেননি। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থীসহ তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 

সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আরও ৯ জনসহ মোট ৩৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD