সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদের কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ১ মিনিটের নিরবতা পালন করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।বৃহষ্পতিবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচী পালন করেন তারা।এর পরপরই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে। সড়কে ইট পাথর ও গাছের গুড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন জালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি শামিয়ানা টানিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।এতে করে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে সাগরকন্যা কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার সাথে সড়কপথে যাত্রীবাহি ও পণ্যবাহিসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের উভয় প্রান্তে যানবাহনের তীব্র জটের সৃষ্টি হয়েছে।
যাত্রীসাধারণ চরম ভোগান্তির মধ্যদিয়ে পায়ে হেটে সড়কের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে গিয়ে বিকল্প পথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন।উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা মানুষের ভোগান্তি চাই না, আবার দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লাশেও ফিরতে চাই। তাই আমাদের দাবী দ্রুত মানা হোক নয়তো আন্দোলন আরো কঠোর হবে।ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের কারনে একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটক আটকে থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাহিরেই অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়। এর প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলো শিক্ষার্থীরা।২৬ মার্চ থেকে তাদের লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রধান, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লিখে ভিসি’র পদত্যাগ দাবী, ভিসি’র কুশপুত্তলিকা দাহ ও মশালমিছিল সহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এজন্য আন্দোলনের দু’দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার ঘোষনা দিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।পরবর্তীতে শনিবার (৬ এপ্রিল) বরিশাল সার্কিট হাউজে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিশে রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা সে নোটিশ প্রত্যাখান করে উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
Leave a Reply