শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় গত ৪ ডিসেম্বর সোমবার সকালে নৌকা মার্কার সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিষ্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের পাশে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে চেয়ারে বসে ছিলেন কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী। সেই সমাবেশের একটা ছবি ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় “সমাবেশে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে আচরণবিধি লঙ্ঘন” করার দায়ে ঝালকাঠি-১ আসনের আলোচিত আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান ওমর বীর উত্তমকে কারন দর্শানো নোটিশ করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত সংবাদ টেলিভিশন চ্যনেল, দৈনিক পত্রিকা এবং বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ দাবীকারী (আগ্নেয়াস্ত্র ধারী) আব্দুল জলিল মিয়াজী তার নিজের ফেসবুক আইডিতে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। বুধবার মধ্যরাতে “Miazi barta” নামের ঐ নেতার ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেছেন, ‘আগামী ৭জানুযারী সংসদ নির্বাচনের পর সকল মিথ্যাচার ও নোংড়ামীর দাত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে । হলুদ সাংবাদিক অতিরিক্ত বারাবারি করছে সকলের আমলনামা আমার হাতে জমা আছে। বিজয় মিছিলের পর উচিৎ শিক্ষা দেয়া হবে। যারা বেশী লাফালাফিতে ব্যাস্ত তারা সামলাইতে পারবাতো?’ এর আগেও জলিল মিয়াজীর পৃথক দুটি আপত্তিকর ফেসবুক পোষ্টে ক্ষুব্দ ছিলো সরকার দলীয় নেতাকর্মী এবং পুলিশ সদস্যরা। যা নিয়ে ব্যপক সমালোচনা হয়। তবে এবার গনমাধ্যম কর্মীরা বিরুপ মন্তব্য প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য বিএনপির নেতা তার “Miazi barta” নামের ফেসবুক আইডিতে গত ২ অক্টোবর লিখেছেন, ‘এই অক্টোবর মাসেই আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হবে। কিছু দিনের মধ্যে এই সরকারের পতন হবে। আবার একই আইডিতে ২৮ অক্টোবর লিখেছেন, ‘শান্তিপূর্ন মহাসমাবেশে পুলিশ অতর্কীত হামলা করলো, কাকরাইল মোড়ে দাঁড়িয়ে নেতাদের বক্তব্য শুনছিলাম। হঠাৎ করে আমার সামনে গ্রেনেট মারলো সিভিল ড্রেসে পুলিশ। এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’
বিএনপি নেতার এধরনের ফেসবুক ষ্টাটাসে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক মহল। এ বিষয়ে একাধিক সাংবাদিক নেতাদের সাথে। কাঁঠালিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক মো. শহিদুল বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জলিল মিয়াজীর ষ্ট্যাটাস নি:সন্দেহে আপত্তিকর। তিনি বিজয় মিছিলের ঘোষনাও দিয়েছেন যা আইনত নয়।
সাংবাদিক ক্লাবের সভাপতি আব্দুর রহিম রেজা বলেন, ‘বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে ফেসবুকে হুমকি দেয়া অবুঝ দারের সামিল। একজন ব্যক্তি সে যে দলেরই হোক, তার বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ প্রকাশ হলে আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ডিজিটাল প্লাটফর্মে হুমকি এটা দুঃখজনক।
ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী খলিলুর রহমান বলেন, একজন রাজনীতিবিদ হয়ে জলিল মিয়াজী সাংবাদিকদের সম্পর্কে ফেসবুকে যা লিখেছেন তা যথেষ্ট কুরুচিপূন্ন এবং আপত্তিকর। আমি এর নিন্দা জানাই।
এ ব্যাপারে কাঁঠালিয়া উপজেলার বিএনপির বহিস্কৃত সাবেক সভাপতি জলিল মিয়াজী বলেন, আমি সব সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে লিখিনাই। নাম নির্ধারিত একজনের উদ্দেশ্যে লিখেছি। তাকে নির্বাচনীর সহিংসতার হুমকির আগাম বার্তা দিলাম৷ কেননা নিবার্চনের পরে সব জায়গাতে সহিংসতা হয়। আমরাও নির্বাচনে বিজয়ী হবার পরে সেই রকম কাঁঠালিয়া উপজেলায়ও সহিংসতা হবে। তখন কাউকে ছার দেওয়া হবে না।
উল্লেখ, গত ৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের গঠন করা ঝালকাঠি-১ আসনের অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সিনিয়র জজ পল্লবেশ কুমার কুন্ডু স্বাক্ষরিত শাহজাহান ওমরকে দেয়া কারন দর্শানোর ঐ নোটিশে প্রার্থীর আচরন বিধিমালা ২০০৮ এর অধীন বিধি ৬ (ক), (গ) ও বিধি ১২ লঙ্ঘনের শামিল উল্লেখ করা হয়। এদিকে কারন দর্শানোর জবাব পত্র ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে পৌছে দিয়েছে শাহজাহান ওমর।
Leave a Reply