সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
গলাচিপা প্রতিনিধি॥ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় উপকূলীয় গলাচিপা উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জরাজীর্ণ ও অসম্পূর্ণ রাস্তা থাকায় ছয়টি সাইক্লোন শেল্টারের জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানরা। অপরদিকে দুর্গম চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলার সাইক্লোন শেল্টারটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এখানে প্রতিবছরই আশ্রয় নেয় আশ্রিতরা। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস এম দেলোয়ার হোসাইন জানান, ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রস্তুতিমূলক উপজেলা কমিটির সভা করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১০৭টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন কমিটি ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ সাতটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকাগুলো হলো গলাচিপা সদর ইউনিয়নের চরকারফারমা, গোলখালী ইউনিয়নের নলুয়াবাগী, চরকাজল ইউনিয়নের ধলার চর, পশ্চিম কাজল, চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা ও চরআগস্তি গ্রাম।
এ বিষয় চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবিশ্বাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল বলেন, চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলার সাইক্লোন শেল্টারটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবছরই ঝড়ের সময় এ ভবনটিতে দুর্গত মানুষকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা এলাকাটি বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ এলাকা। এখানে প্রায় ১৫০০ থেকে ১৮০০ মানুষ বসবাস করে। কিন্তু একটি মাত্র সাইক্লোন শেল্টার থাকায় এখানে মাত্র ৪০০ লোক আশ্রয় নিতে পারে। এ ভবনটি ছাড়া পাকা কোনো ভবন এ চরটিতে নেই।
এদিকে চরকাজল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রুবেল বলেন, চরকাজল ইউনিয়নের চরকাজল ইউনিয়নে ছোটশিবা সালেহিয়য়া দাখিল মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের সাথে দেড় শ ফিট রাস্তা পাকা। কিন্তু বাজার থেকে ওই সাইক্লোন শেল্টার পর্যন্ত সংযোগ দিতে প্রায় ছয় হাজার ফুট রাস্তার কাচা রয়েছে। ফলে এখানের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এ ছাড়াও আমাদের পাশের ইউনিয়নের পূর্ব দক্ষিণ চরআগস্তি, দক্ষিণ চরআগস্তি ও দক্ষিণ চরবিশ্বাস (চৌকিদার বাড়ি) এলাকার সাইক্লোন শেল্টারের সাথে মূল সড়কে রাস্তা এখনো পাকা করা হয়নি।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, আমরা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করেছি। ১২টি ইউনিয়নে ১২টি টিম গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম ও দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি সাইক্লোন শেল্টারে গড়ে কমপক্ষে ৪০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এ ছাড়া গলাচিপা উপজেলায় কেউ আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে থাকবে না। আমরা কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সব এলাকার খবর রাখছি।
তিনি আরো বলেন, চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলার সাইক্লোন শেল্টরটি পুরনো। কিন্তু এ মুহূর্তে কিছুই করার নেই। ওই এলাকা এবং গলাচিপার বিভিন্ন চরাঞ্চলের জন্য ৮টি মুজিব কেল্লার প্রস্তুাব করা হয়েছে যার মধ্যে দুটির কাজ কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে।
গলাচিপা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহিন বলেন, উপজেলা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে সভা করেছি। প্রতিটি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রিত মানুষের জন্য শুকনা খাবার ও নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টা স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন করে শিক্ষককে সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখার জন্য্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছ। দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগের সময় আশ্রিত মানুষ ও মালামালের নিরাপত্তার জন্য গ্রামপুলিশ ও আনসারদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Leave a Reply