কলাপাড়ায় হাসপাতালে মায়ের পাশেই কাটছে দুই মেয়ের দিনরাত, মা দিবসে স্বর্ণার চোখের জল মোছার কেউ নেই Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




কলাপাড়ায় হাসপাতালে মায়ের পাশেই কাটছে দুই মেয়ের দিনরাত, মা দিবসে স্বর্ণার চোখের জল মোছার কেউ নেই

কলাপাড়ায় হাসপাতালে মায়ের পাশেই কাটছে দুই মেয়ের দিনরাত, মা দিবসে স্বর্ণার চোখের জল মোছার কেউ নেই




তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ।। মা দিবসে সকল ছেলে-মেয়েরা যখন মায়ের সাথে হাসি,আনন্দে সময় কাটাচ্ছে তখন পিতৃহীন এ দুইবোন হাসপাতালের গ্রিল ধরে লুকিয়ে চাখের জল ফেলছে। হয়তো প্রকৃতির কাছেই বিচার চাইছে তারা।দশম শ্রেণির ছাত্রী স্বর্ণার দিনরাত কাটছে এখন হাসপাতালে অসুস্থ্য মায়ের পাশে। গত চারদিন ধরে বই নিয়ে বসা হয়নি তার। আপন কাকা সমির হাওলাদারের নির্মম নির্যাতন ও মায়ের ব্যথার যন্ত্রনায় মা যখন ছটফট করে তখর মায়ের মাথার পাশে বসে শান্তনা দিচ্ছে। মা ও বোনের এ কষ্ট কাছ থেকে দেখছে ছোট বোন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সমাপ্তি।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে রোববার দুপুরে কথা হয় এ অভাগী মা বাসন্তী রানীর সাথে। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নিজকাটা গ্রামের এ গৃহবধু স্কুলের গন্ডি পার হতেই বসতে হয় বিয়ের পিড়িতে। বয়স মাত্র ২৮ হলেও স্বামীকে হারিয়েছে একযুগ আগে। তখন ছোট মেয়ে দুই মাসের গর্ভবতী।

নিজের ভবিষত চিন্তা না করে কখনও রাস্তার মাটি কেটে, হোগলা বুনে দুই মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। দুই মেয়ের উজ্জল ভবিষতের স্বপ্ন দেখে বিসর্জন দিয়েছেন নিজের ভবিষ্যত। বড় মেয়ে স্বর্ণা এখন পাখিমারা প্রফুল্ল ভৌমিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে ও ছোট মেয়ে সমাপ্তি নিজকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে।

বাসন্তী রানী জানান, তাদের আতংক এখন দেবর সমির হাওলাদার। স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটা দখল নিতে একেরপরএক চক্রান্তের পর এবার তাদের ঘর থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে উঠানে ফেলে মধ্যযুগীয় নির্যাতন করে তার উপর উপর। রডের আঘাতে মাথায় প্রায় তিন ইঞ্চি ফেঁটে চৌচির হয়ে যায়। মাথা থেকে প্রচন্ড বেড়ে রক্ত বের হলেও তার নির্যাতন থেকে থাকেনি। দুই মেয়ে মায়ের উপর নির্যাতন করতে দেখে কাকাকে বাঁধা দিলেও তাঁদেরও মারধর করে। গত ৮ মে বিকালে এ নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে প্রতিবেশী নারীদের উপরও হামলা চালায় সমির।
এ হামলার খবর দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী একজোট হয়ে এগিয়ে আসলে সমির পালিয়ে যায়। ওই রাতেই মা, দুই মেয়ে ও এক প্রতিবেশীকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ৯ মে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দেবর সমির ও পুতুল রানীর নামে মামলা দায়ের করেন বাসন্তী রানী। আদালত কলাপাড়া থানার ওসিকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেয়ার নির্দেশ দেন।
মায়ের উপর নির্মম নির্যাতনের দৃশ্য এখনও ভুলতে পারেনি দশম শ্রেণির ছাত্রী স্বর্ণা। স্বর্ণা জানায়, মায়ের মাথা থেকে যখন দরদর করে রক্ত বের হচ্ছিল তখনও তাকে কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মেরে যাচ্ছে কাকা। সে দৌড়ে গায়ের ওড়না দিয়ে মায়ের মাথার ক্ষতস্থান বাঁধতে গেলে তাকেও মারধর করে।

স্বর্ণা জানায়, আজ সব বন্ধুরা মাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবে, ঘরে কতো ভালো মন্দ রান্না হবে। কিন্তু আমারতো যন্ত্রনায় ছটফট করছে। মায়ের চোখের জল আমাদের দুই বোনকে ভুলিয়ে দেয় এ দিবসের কথা। বাবার মুখটা মনে নেই আমার। ছোট বোনতো বাবাকেই দেখেনি। মায়ের ঘামে ভেঁজা কষ্টের শ্রমে তারা দু’মুঠো ভাত খেয়ে লেখাপড়া করছে। কিন্তু আজ যদি মায়ের কিছু হয়ে যায় তখন কে দেখবে তাঁদের।

তারা তো এতিম হয়ে যাবেন। তাঁর মাকে যারা মেরেছে তাদের কী শাস্তি হবে না এ প্রশ্ন করে কেঁদে ফেলে তারা। এই দুই বোনের চোখের জল ও আর্তনাদ দেখে হাসপাতালে অন্য রোগীর স্বজনরাও চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD