বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পায়রা বন্দরের ফোরলেন সংযোগ থেকে শেখ কামাল সেতুর সংযোগ পর্যন্ত মহাসড়ক এখন ১১ চাঁদাবাজের দখলে। দিন-রাত এরা সড়কে চলাচলকারী মালামালবাহী টমটম, ভ্যান, যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল, পর্যটকের বাস, কুয়াকাটাগামী মালবাহী যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে। ফ্রিস্টাইলে যানভেদে ৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। আবার টমটম, ভ্যান থেকে মাসিক হিসেবে টাকা আদায় করা হয়। পায়রা বন্দর ফোরলেন সড়কের লোন্দাগামী সংযোগস্থল থেকে শেখ কামাল সেতুর মহাসড়কে এখন চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে যাত্রীসহ যানবাহনের মালিক, চালকরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান মহিব প্রকাশ্যে এসব চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছেন। কলাপাড়া পৌর মেয়র চেষ্টা করেছেন কিন্তু চাঁদাবাজি থামেনি। এদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। নতুন নতুন সড়কে চাঁদাবাজ এ চক্র মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। চারটি স্পটে এরা দাঁড়িয়ে যানবাহনে চাঁদা আদায় করছে। প্রত্যেক চাঁদাবাজের হাতে পৌর টোলের রশিদ রয়েছে। ওই রশিদ দিয়েই আদায় করা হচ্ছে টাকা। এছাড়াও শ্রমিক সংগঠনের কল্যাণ ফি’র নামে অকল্যাণকর এ কাজটি চলছে। সওজের এবং নির্মাণাধীন পায়রা বন্দরগামী ফোরলেন মহাসড়ক হলেও কলাপাড়া পৌরসভার রশিদ হাতে চাঁদাবাজ এ চক্র চাঁদা আদায় চালিয়ে যাচ্ছে। সবজি, কাঁচামালবাহী টমটম, ভ্যান কিংবা পিকআপ আটকে হাজার হাজার টাকা চাঁদাবাজির কারণে এসব কাঁচামালের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয় বিক্রেতাদের। কোনো উপায় না পেয়ে গত বুধবার টমটম, ভ্যানসহ নিত্যপণ্যবাহী যানের চালকরা কলাপাড়া প্রেস ক্লাবে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নাচনাপাড়া এলাকার রাজার নেতৃত্বে রাস্তায় চাঁদাবাজ নির্ধারণ করে স্পটভিত্তিক চাঁদা তোলা হয়। ভ্যান, অটো, টমটমসহ সব যানের চালকদের অভিযোগ, রাজার চাঁদাবাজ চক্রের কাছে তারা এখন জিম্মি হয়ে পড়েছেন। রাজার সঙ্গে সড়কে সরাসরি চাঁদা তুলছে আরও ১০ জন। চালকদের অভিযোগ, দিনভর টমটম, ভ্যান চালাই। সংসারের চাল কেনার টাকা হয় না। সেখানে পৌরসভার লেখা ২০ টাকার রশিদ দিয়ে ৫০ টাকা লিখে আদায় করা হয় ৭০ টাকা।
আবার মাসিক হিসেবে আদায় করা হয় ২০০ টাকা। রাজা মিয়ার নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজিতে জড়িত নাচনাপাড়ার খোকন, কলোনির মাসুম, চাকামইয়ার হানিফ। বাকিদের নাম জানা যায়নি। ফোরলেন, চৌরাস্ত, শেখ কামাল সেতুর সংযোগ সড়কে ও চিঙ্গরিয়া মোড়ে যানবাহন আটকে টাকা তোলা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৪-৫ দিন আগে নাসির হাওলাদার নামের এক টমটম চালককে মারধর করা হয়। সম্প্রতি লাঞ্ছিত করা হয় আরও একজনকে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম ইতিপূর্বে দুদফা দু’জনকে আটক করেন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে এরা ফের চাঁদাবাজি করছে।
Leave a Reply