মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার আয়তন ৪৯২.১০ বর্গকি.মি। ১২টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভা, ২৪৪টি গ্রাম রয়েছে এখানে। উপজেলায় কার্ডধারী জেলেদের সংখ্যা ১৮ হাজার ৫’শ ৮ জন। এদের মধ্যে চলমান (ভিজিএফ) সুবিধাভোগী জেলেদের সংখ্যা রয়েছে ১০ হাজার ৫’শ ৯৩ জন।
মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ৩৭ শতাংশ জেলে। শুধু জীবিকার তাগিদেই নয় প্রতি মূহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকার করে অর্থনীতির চাকা সচল করছেন পেশাদার জেলেরা। উওাল সাগর ও বন্যার সময় জীবন যুদ্ধে হার না মানা এসব সাহসী আত্মনির্ভরশীল মানুষগুলো নির্ধারিত সময়ে কাঙ্খিত মৎস্য আহরনের লক্ষ্যে ছুটে যায় গভীর সমুদ্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে।
এ সময় উওাল সাগরে ট্রলার ডুবে গেলে কারো কারো খোঁজ স্বজনেরা পেলেও অনেকেরই সলিল সমাধি হয়েছে সাগরে। আর এসব জেলেদের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সরকারী ভাবে তালিকা প্রনয়নের মাধ্যমে বিশেষ প্রনোদনা (ভিজিএফ) এর আওতায় আনলেও হালনাগাদ তালিকার ফাঁদে পড়ে সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন পেশাদার জেলেরা। ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় পেশাদার অনেক জেলের কপালেই এখন চিন্তার ভাঁজ।
গভীর সমুদ্র ও নদ-নদীতে মাছ ধরতে না পারায় খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে পেশাদার অসহায় হতদরিদ্র জেলে পরিবার গুলোতে। জেলেদের অভিযোগ ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের জেলে তালিকায় অর্ন্তভুক্ত মৎস্য শিকারিদের (ভিজিএফ) খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করেছে সরকার। দীর্ঘ এ সময়ে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ জেলে পেশা পরিবর্তণ করে ভিন্ন পেশায় ঝুঁকেছেন। তবে তালিকা
হালনাগাদ না হওয়ায় বর্তমানে সরকারের প্রদেয় এই সুবিধা থেকে ছিটকে পড়েছেন সত্যিকারের জেলেরা। লালুয়া গ্রামে জেলে ষাটোর্ধ্ব আবদুর রহিম জানান, আমি ছোট বেলা থেকে এ পেশায় খেটে খাচ্ছি। বর্তমানে লকডাউন চলছে আবার ঝাটকা ধরা বন্ধ। কিন্তু আমি চাল পাইনি।
সাইদ হাওলাদার জানান, বাপ দাদাসহ সবাই এই পেশার মাধ্যমে সংসার চলে। কার্ড আছে তবুও চাল পাননি বলে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। দুধল হাওলাদার বলেন, সারাবছর ঝড় ঝাপটা উপেক্ষা করে সাগর, নদী মোহনায় মাছ শিকার করে থাকেন তবুও স্থানীয় প্রভাবে তার নাম তালিকাচ্যুত হয়েছে। এই অভিযোগ ধুলাসার ও লচাপলী ইউপির শতাধিক জেলে সদস্যদের। লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, আমার ইউনিয়নে ২৭ শতাধিক জেলে থাকলেও তালিকায় রয়েছে মাত্র ১৪’শ ৫০ জনের নাম।
তালিকা হাল নাগাদ না হওয়ায় প্রায় অর্ধেক পেশাদার জেলেরা তাদের নিষেধাজ্ঞাকালীন দুর্যোগসহ চলমান করোনার দুর্যোগের মাঝেও সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অনুপ সাহা জানান, করোনার পরিস্থিতি স্বাভবিক না হওয়া পর্যন্ত হালনাগাদ তালিকা করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুতই প্রতিটা ইউনিয়নে তালিকা প্রনায়ন করা হবে।
Leave a Reply