সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: আর কয়েক দিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। নৌ-রুট ও সড়ক পথে আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে কমপক্ষে পনেরো লক্ষাধিক মানুষ ফিরবে দক্ষিণাঞ্চলে। এই বৃহৎ সংখ্যক লোকসংখ্যার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বরিশালের প্রশাসন ইতিমধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান জানিয়েছেন, আমরা ইতিমধ্যে সমন্বয় সভা করেছি। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আশা করি এবার ঘরমুখো মানুষকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে পারবো। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বরিশালে ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে অপরাধী চক্র। মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী চক্র, মলম বাহিনী রয়েছে এই তালিকায়। গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে, ছিনতাইকারীদের নেতৃত্বে থাকা অর্ধশতাধিক অপরাধীর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ওই তালিকায় পুরানোদের পাশাপাশি নতুন কিছু নাম উঠে এসেছে।
পুলিশের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বরিশাল ও আশেপাশের বেশ কয়েকটি চক্র রয়েছে যারা বিভিন্ন উৎসবকে ঘিরে লোকসমাগম বেশি হয় এমন এলাকা যেমন লঞ্চঘাট, রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এদেরকে ঈদ সার্ভিস শুরু হওয়ার আগেই আটকের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ঢাকা থেকে কোন চক্র বরিশালে যেন আসতে না পারে সেজন্য পুলিশি তৎপরতা চলছে। তারই অংশ হিসেবে লঞ্চঘাট এলাকায় নিয়মিত চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশী চালাচ্ছে নৌ-পুলিশ। বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স প্রদানের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
যদিও এখনো ফোর্স পাইনি; তবে নিয়মিত নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আমরা কাজ করছি। এই কর্মকর্তা জানান, নৌ-পথে মাদক যেন বরিশালে ঢুকতে না পারে, ছিনতাইকারী চক্র বা মলম বাহিনী যেন সক্রিয় হয়ে না উঠতে পারে সেজন্য এখন থেকেই নৌ-পুলিশের অভিযান চলছে। ওদিকে ঈদ ও ঈদ বাজারকে ঘিরে বাড়তি টহল শুরু করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এয়ারপোর্ট, কাউনিয়া, বন্দর ও কোতয়ালী থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চুরি-ছিনতাই, মাদক কারবারি ও প্রতারণা রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে টহল নিয়মিত ডিউটিতে রাখা হয়েছে। ঈদ যত সন্নিকটে চলে আসবে এমন নজরদারী আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ন দুটি টার্মিনাল রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ, সদর রোড, চকবাজার এবং পোর্ট রোডে বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার নাছির উদ্দিন মল্লিক জানান, মেট্রোপলিটন পুলিশের সবগুলো ইউনিট একসাথে কাজ করছে।
শপিংমল, ব্যবসা প্রধান এলাকাসহ নগরীর অলি-গলিতে আমাদের সদস্যরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি ঈদ এলে চুরি, ছিনতাইকারী, মলমবাহিনী সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরা অনেকের ঈদযাত্রা ভন্ডুল করে দেয়। এবার যেন একটি লোকও মলমবাহিনীর, ছিনতাইকারীর খপ্পরে না পরে সে জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েই পুলিশ কাজ করছে। এই কর্মকর্তা জানান, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা টিম দায়িত্ব পালন করছে। আশা করি বরিশালবাসী নির্বিঘ্নে ঈদ কাটাতে পারবে।
Leave a Reply