রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা উদযাপন করবেন পবিত্র শবেবরাত, যা ইসলামে সৌভাগ্যের রাত ও মুক্তির রাত হিসেবে পরিচিত। শাবান মাসের ১৪ তারিখের এই মহিমান্বিত রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য রহমতের দরজা খুলে দেন এবং অসংখ্য মানুষকে ক্ষমা করেন।
বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মতো বাংলাদেশেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হবে শবেবরাত। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই রাতে নফল নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মশগুল থাকবেন। অতীতের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার দেশ গড়ার আহ্বান
পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। এক বাণীতে তিনি বলেন, “আসুন, সব ধরনের অন্যায়, অনাচার, হানাহানি ও কুসংস্কার পরিহার করে আমরা ইসলামের শান্তির বার্তা ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সব স্তরে প্রতিষ্ঠা করি।”
তিনি আরও বলেন, “এই মহিমান্বিত রাতে আল্লাহ পাক তাঁর অসীম দয়া ও ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত করে দেন। তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের নিজেদের সংশোধন করতে হবে এবং মানবকল্যাণে কাজ করতে হবে।”
তারেক রহমানের দোয়া ও বার্তা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে দেশ ও জাতির সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
তিনি এক বাণীতে বলেন, “শবেবরাতের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের গুনাহ মাফ করেন এবং ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই আমাদের উচিত ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।”
আতশবাজি ও পটকা নিষিদ্ধ:
পবিত্র শবেবরাতের পবিত্রতা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো, বিস্ফোরকদ্রব্য কেনাবেচা ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “শবেবরাতের ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও বিস্ফোরকদ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলো।”
শবেবরাতের রাত মুসলমানদের কাছে শুধু ক্ষমা ও বরকতের রাত নয়, এটি পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তাও বহন করে। শাবান মাসের পরই আসে পবিত্র মাহে রমজান, যা সিয়াম সাধনার মাস। তাই শবেবরাত থেকেই রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
এই রাতে অনেকেই কবরস্থানে গিয়ে আপনজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এছাড়া আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করারও বিশেষ প্রথা রয়েছে।
পবিত্র শবেবরাত মুসলিম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা বান্দাদের জন্য আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত লাভের সুযোগ এনে দেয়। এই মহিমান্বিত রাতের মাহাত্ম্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবকল্যাণ ও আত্মশুদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়াই হোক সবার লক্ষ্য।
Leave a Reply