বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের পায়রা বন্দরমুখী চার লেন সড়ক এলাকায় ঢাকার সাংসদ হাজী সেলিমের নিয়ন্ত্রনে থাকা পৌনে ৫ একর কৃষি জমি প্রকৃত মালিকরা পুনরুদ্ধার করতে তৎপরতা শুরু করেছেন। শনিবার ১৩ কৃষক পরিবার তাঁদের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার করার কাজে হাত দেন। হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা গ্রুপের লোকজন ২০১৬ সালের মে মাসে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের এ পরিমাণ কৃষি জমি দখল করে নেয়।
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা জানায়, রজপাড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার মিনা, শহিদুল মিনা, দেলোয়ার মিনা, আবুল কালাম, ফুলবানু, আব্দুল মান্নান, সৈয়দ আহসান উদ্দিন, ইসমাইল গাজী, ফিরোজা বেগম, মোজাম্মেল হওলাদার, কামরুল ইসলাম ও ইউসুফ মিনা গং এ জমির প্রকৃত মালিক। টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া মৌজার এসএ ৯০, ১১২, ১১৩, ১১৫, ১২২ খতিয়ানের এই জমি বছরের পর বছর ধরে এসব কৃষকরা শান্তিপূর্ণভাবে চাষাবাদ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। হঠাৎ করে ২০১৬ সালের মে মাসে মদিনা গ্রুপের লোকজন স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর মদদে জোর করে পৌনে ৫ একর কৃষি জমি দখল করে নেয়। এরপর ২০১৯ সালে জমির চারদিকে বালু ভরাটের জন্য রিং বাঁধ দেয়। তখন জমির মালিকরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। মদিনা গ্রুপের ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও প্রভাবের কারণে অসহায় কৃষকরা পিছু হটে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকরা তাঁদের দখলচ্যুত হওয়া চাষের জমি পুনরুদ্ধারের কাজ করছেন। তাঁরা স্কাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে মদিনা গ্রুপের দেয়া রিং বাঁধ কেটে মালিকানা ফিরিয়ে নেয়ার কাজ করছেন।
ভূক্তভোগী কৃষক পরিবারের সদস্য সৈয়দ আহসান পাভেল জানান, তাঁদের এক একর ৪৩ শতক জমি হাজী সেলিমের লোকজন দখল করে নেয়।
বিষয়টি নিয়ে হাজী সেলিমের লোকজনের সাথে কথা বলেও কোনো সুরাহা পাইনি। অপর জমির মালিকরাও দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। স্থানীয় প্রশাসনও কোনো সহায়তা করেনি।
মদিনা গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক (ভূমি) মো. নুরুল হামিদ বলেন, ‘ওই জমি একজন মালিকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে। তা ছাড়া জমি ক্রয়ের আগে সাইনবোর্ড দেয়া হয়। তখন কেউ যোগাযোগ করেনি। কাগজপত্র ঠিক দেখে পুরো বাজার দরে চার একর ৭৪ শতক জমি ক্রয় করা হয়। যার মধ্যে পরবর্তিতে তিন একর ৯২ শতক জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যা নিরসনে দাবিদারদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক করা হয়। একই জমি এখন দুইবার কিনতে হচ্ছে। উল্টো প্রতারণার শিকার আমরা হয়েছি।
এনিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানীয় লোকজন জানান, মদিনা গ্রুপ জমি দখলের পর ২০১৬ সালের মে মাসে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা তাঁদের জমি ফিরে পাবার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ধরণা দিয়েছেন। তাঁরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকি এ নিয়ে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে এ নিয়ে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন। তখন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জমি দখলের খবরাখবর জাতীয় ও আঞ্চলিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল।’
Leave a Reply