রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ‘মোর নাতীর (নাতনী) লাশ লইয়া আইছেন কয়দিন আগে। আইজগো আইছেন মোর মাইয়ার লাশটা নিয়া। বউ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এ কেমন বিচার করলো আল্লাহ। মুই কি ভুল হরছি আল্লাহ্’র ধারে যে হেই ভুলের এতো বড় শাস্তি দিলো মোরে। এহন মাইয়াডার মরা মুখটি খুলে দেন আমার মুখটি শেষবারের মতোই দেখলাম।’
এভাবেই হু-হু করে কেঁদে নিজের কষ্টের কথা বলছিলেন সিমুর বাবা আব্দুল আজিজ।
তিনি আরো বলেন, ‘আম্মেরা কেম্মে বোঝবেন যে নিজ হাতে দুই নাতনী ও মাইয়ার লাশ কবরে থোয়া কিযে যন্ত্রণার। মাইডার লাশ সামনে রাইখা কানতেও পারি না।’
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন ঘটনায় বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের জীর্ণশীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে দুই যমজ নাতনীর মরদেহের পরে এবার এলো মেয়ে সিমু আক্তারের মরদেহ।
গতকাল বুধবার সকালে নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। সিমুর ভাই হান্নান নিজে গিয়ে তার বোনের মরদেহ শনাক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে যমজ দুই মেয়ে লামিয়া-সামিয়ার কবরের পাশেই তার মা সিমুর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। প্রতিবেশীদের যাওয়া আসা থাকলেও বাড়িতে নেই কান্নার কোনো শব্দ। এলাকার লোকজন জানান, যেহেতু লাশটি অর্ধগলিত তাই ভোররাতেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
সিমুর ভাই হান্নান বলেন, প্রতিদিনই বোনের মরদেহর খোঁজখবর নিতে ঝালকাঠি সেই ঘটনাস্থলে যাই। বুধবার জানতে পারি দুই মহিলার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন সংবাদ পেয়ে ছুটে যাই গিয়ে দেখি আমার বোনের মরদেহ পড়ে আছে মাটিতে। জেলা প্রশাসনের কাছে বোনের সকল তথ্য দিয়ে আমার বোনের মরদেহ নিয়ে বাড়িতে আসি।
Leave a Reply