বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ অপরাহ্ন
আমজাদ হোসেন, বাউফল প্রতিনিধি॥ সরকারি প্রজ্ঞাপন লঙ্ঘন করে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী সদস্য করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)।পরবর্তীতে তিনি ওই বিদ্যালয়ের তিন বছর মেয়াদি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হয়েছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ‘বাউফল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে।
এ ঘটনায় অভিভাবক ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। গত কয়েকদিন পর্যন্ত এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির চারজন হবেন নির্বাচিত অভিভাবক। ওই চারজন অভিভাবকের মধ্যে আবার দুজন নারী ও দুজন পুরুষ হতে হবে। পদাধিকার বলে প্রধান শিক্ষক হবেন সদস্য সচিব। সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একজন হবেন শিক্ষক প্রতিনিধি। সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকটতম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকও ওই কমিটির সদস্য হবেন। যিনি তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মনোনীত হবেন। একজন হবেন জমিদাতা সদস্য (যদি থাকেন)।
কমিটিতে বিদ্যালয়টি যে এলাকায় অবস্থিত ওই এলাকার দুইজন শিক্ষানুরাগী সদস্য থাকবেন। তাদের একজন পুরুষ ও অন্যজন নারী সদস্য হবেন। যা স্থানীয় সাংসদের পরামর্শক্রমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মনোনীত হবেন।
কিন্তু কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইউএনও পিজুস চন্দ্র দে’কে স্থানীয় সাংসদ আ.স.ম ফিরোজ শিক্ষানুরাগী সদস্য করার জন্য প্রধান শিক্ষককে পরামর্শ দেন। আর সেই পরামর্শ অনুযায়ী ইউএনওকে শিক্ষানুরাগী সদস্য হিসেবে প্রধান শিক্ষক মনোনীত করেন। পরবর্তীতে ২৫ সেপ্টেম্বর তিনিই সভাপতি নির্বাচিত হন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যরয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ আসমা পারভীন বলেন,‘তিনি (আ.স.ম ফিরোজ) ইউএনও স্যারকে শিক্ষানুরাগী সদস্য হিসেবে মনোনীত করার পরামর্শ দিয়েছেন বলেই তাকে শিক্ষানুরাগী সদস্য করা হয়েছে। এর বাহিরে আমি কিছু বলতে পারবো না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন,‘সারাদেশে শিক্ষিত জনপথ হিসেবে পরিচিত বাউফল উপজেলা। অথচ সেই উপজেলায় ভাড়া করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এটা বাউফলবাসির জন্য লজ্জার।’ তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে ঘৃনিত কাজ করেছেন ইউএনও। তিনি কিভাবে সরকারি প্রজ্ঞাপন লঙ্ঘন করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য এবং পরবর্তীতে সভাপতি হয়েছেন?
এক অভিভাবক বলেন,‘তাহলে কি উপজেলা সদরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় এলাকার কোনো ব্যক্তির শিক্ষানুরাগী হওয়ার মত যোগ্যতা নেই ?’
এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন,‘ইউএনও স্যারকে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী করে তাকে অসম্মান করা হয়েছে। আর তিনি (ইউএনও) সভাপতি হয়ে তার পদকে অসম্মান করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ইউএনও যে কোনো সময় বদলি হয়ে যেতে পারেন। তখন কি হবে ?
এ বিষয়ে ইউএনও পিজুস চন্দ্র দের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিব্রতবোধ করেন। কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ সাইয়াদুজ্জামান বলেন,‘সরকারি প্রজ্ঞাপন লঙ্ঘন করে ইউএনওকে শিক্ষানুরাগী সদস্য কিংবা সভাপতি করার কোনো সুযোগ নেই।
Leave a Reply